প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনের জন্য দুর্দান্ত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের আশা নিয়ে তার অভূতপূর্ব তৃতীয় মেয়াদের সূচনা করেন। কিন্তু এই মেয়াদের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে অশান্তির ঝড় উঠেছে দেশটিতে।
ঝড়ের তাণ্ডব শি’র হাতে বাছাই করা শাসক অভিজাতদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে। দিন দিন প্রশাসনের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। দুই শীর্ষ জেনারেলের রহস্যজনক অপসারণ ও অর্থনৈতিক সংকটের এ মন্দা সময়ে নানান প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে শি’র শাসনব্যবস্থা। সিএনএন।
মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে চীনের মন্ত্রিসভার দুই সিনিয়র সদস্য রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। যারা বিশ্বের কাছে দেশের প্রধান কূটনীতিক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফুকে তিন সপ্তাহ ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে এক মাস ধরে জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অদৃশ্য হওয়ার পর নাটকীয়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। পশ্চিমের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই কর্মকর্তাদের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হুমকিস্বরূপ।
ইতোমধ্যে দুই শীর্ষ জেনারেলের আশ্চর্যজনক অপসারণ একটি অভিজাত ইউনিট পিপলস লিবারেশন আর্মি রকেট ফোর্সকে নাড়া দিয়েছে। সামরিক বাহিনীতে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এদিকে দেশটি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে। রেকর্ড সংখ্যক বেকারত্ব ও স্থানীয় সরকারের ঋণবৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংকটের যেন শেষ নেই।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, শি’র শাসকবৃত্তে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে আস্থার সংকট তৈরির ঝুঁকিও তৈরি করছে। দলের মধ্যেই শি জিনপিংয়ের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই।
চীনা সরকার জনসাধারণকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কোনো আগ্রহ দেখায়নি। দুই হাই-প্রোফাইল মন্ত্রীর নিখোঁজের বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব বেইজিংয়ের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বলছেন, ‘চীনের শাসক অভিজাতদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা তার একদলীয় ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলোকে উন্মোচিত করেছে।’
সিঙ্গাপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড্রিউ থম্পসন বলেন, ‘চীনে যা ঘটছে তা চরম রাজনৈতিক ঝুঁকিকে প্রতিফলিত করে।’
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, শি’র নিজস্ব অনুগতদের সম্ভাব্য পতন শীর্ষ নেতার ওপর খারাপভাবে প্রতিফলিত হবে। তবে থম্পসন বলেন, ক্ষমতায় আসার পর থেকে শি একটি নিরলস দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়েছেন। যার ফলে শত শত সিনিয়র কর্মকর্তা ও জেনারেল এবং আরও লক্ষাধিক নিম্নস্তরের কর্মী বিপদে পড়েছেন।
আন্তর্জাতিক