বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি করা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত ৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বরাবর প্রেরণ করা হয়। ওই চিঠিতে কারণ দর্শানোর সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে আবদুল মোতালেব হাওলাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ জারির পর অবশ্য মোতালেব হাওলাদার তার ফেসবুক থেকে বিতর্কিত পোস্টটি তুলে নিয়ে আরেকটি নতুন স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন- ‘রাজনৈতিভাবে আমি যেটাকে সঠিক মনে করি, আমার দল সেটাকে বেঠিক মনে করলেও আমি অবশ্যই আমার দলের সঙ্গে থাকব।’
তার এই মন্তব্য নিয়েও তোলপাড় শুরু হয়। দলকে হেয় করে কথা বলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুকে ‘রাজনৈতিক কারণে আইন পরিবর্তন করে হলেও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়া হোক’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেন আবদুল মোতালেব হাওলাদার। ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা বিষয়টির জন্য ধন্যবাদ জানালেও নিজ দলের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।
সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজকেও কটূক্তি করে ‘আসল শয়তানের মূল’ বলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন মোতালেব হাওলাদার।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আবদুল মোতালেব হাওলাদারের স্ট্যাটাসে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে শাস্তির সুপারিশ যাওয়ার পর আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। দলের নেতাকর্মীরাও সেটা চাইছেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান বলেন, মোতালেব হাওলাদার এখন দলের জন্য বিষফোঁড়া। তাকে বহিষ্কার করে আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে মাশুল গুনতে হবে। মোতালেব হাওলাদার এখন বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তাকে দলে রাখা বিপজ্জনক।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সদস্য শাহজাহান সিরাজ বলেন, মোতালেব হাওলাদারকে কোলে পিঠে করে নেতা বানিয়েছেন আমাদের অভিভাবক জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি। অথচ সেই অভিভাবকের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দলে সংকট তৈরির চেষ্টা করেছেন তিনি। এখন আবার বিএনপির সঙ্গে আঁতাত করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুরোধ করছেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা যেকোনোভাবে দল থেকে তাকে বহিষ্কার চাই।
এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, দল যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি তার সঙ্গে একমত। এর বাইরে কিছু বলতে রাজি নই।
সারাদেশ