বরিশাল অফিস।। দেশব্যাপী পুলিশের উপর নেতিবাচক ধারণা থেকে সাধারণ মানুষ যখন ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। ঠিক তখনি ভোলা থেকে বরিশালে ছুটিতে এসে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন হাসানুজ্জামান রাহাত নামের এক পুলিশ কনস্টেবল। রাহাতের বিপি নং ৯৩১২১৪৫৮১৭। পুলিশ কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাতের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামে। তিনি গিলাতলী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মোল্লার ছেলে।
সূত্র বলছে- ভোলা সদর থানায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে রয়েছেন রাহাত। ভোলা জেলায় কর্মরত পুলিশের একজন কনস্টেবল বরিশাল নগরীতে এসে রাজনৈতিক মামলার আসামীকে মারধর করতে করতে থানায় নিয়ে যায়। তাও আবার বরিশাল আদালত প্রঙ্গন থেকে। বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে নগরজুড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সাইদুল ইসলাম জানায়, বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গন থেকে খান তুহিন নামের এক সাংবাদকর্মীকে মারতে মারতে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যায় কনস্টেবল রাহাত ও তার সহযোগীরা। এসময় পুলিশ কনস্টেবল রাহাতের সাথে ছিলো চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের মৃত মোবারক আলী চৌকিদারের ছেলে আরিফ চৌকিদার ও রফিকুল ইসলাম রিপনসহ ৪/৫ জনের একটি দল। এ সময় আশেপাশে থাকা লোকজন ছুটে আসলে আরিফ চৌকিদার নিজেকে বিএনপি নেতা বলে পরিচয় দিয়ে তাদের সামনে হুঙ্কার তোলেন। ফলে কেউই এগিয়ে এসে তুহিনতে রক্ষা করতে সাহস পায়নি।
থানা সূত্রে এসআই জয়দেব (ভারপ্রাপ্ত ওসি) জানায়, নগরীর কলেজ রো এলাকার বাসিন্দা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রিপন ৫ আগস্টের পর বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাংবাদকর্মী খান তুহিনকেও আসামী করা হয়। ওই মামলায় সাংবাদিক তুহিন খানকে কনস্টেবল রাহাত ও আরিফ চৌকিদার উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আসামি করে। তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধ রয়েছে বলে জানা যায়।
তবে পুলিশ কনস্টেবল রাহাত ছুটিতে এসে ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে ওই মামলার বাদী রিপনকে সাথে নিয়ে খান তুহিনকে আদালত প্রাঙ্গন থেকে মারতে মারতে কোতোয়ালী থানায় নিয়ে যায় এমন অভিযোগ খান তুহিনের।
তুহিন বলেন আমাকে মারধর করে নিয়ে যাওয়ার পুরো ঘটনা আদালতের সিসি ক্যামেরায় ধারণ রয়েছে এবং আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নই, আমি সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত। আমি বিএনপি নেতার দায়েরকৃত মামলার ঘটনার সাথে কোনভাবেই জড়িত ছিলাম না। তবুও ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে আমার একই এলাকার বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাত ও আরিফ চৌকিদার মামলায় উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে আমার নাম দিয়ে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গনে এসে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তাদের সাথে ছিলো ওই মামলার বাদী রিপন সহ ৪/৫ জনের একটি দল।
এ বিষয়ে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান পাটোয়ারী বলেন- রাহাত ভোলায় কর্মরত ছিলো। গত ছয় দিন আগে ডিএমপিতে যোগাদানের ছাড়পত্র নিয়েছেন তিনি। ওসি আরও বলেন- রাহাত তো বরিশালে কর্মরত নয়। সে যে কাজটি করেছে সেটা অবশ্যই নিয়ম বহির্ভূত।
এ বিষয়ে জানতে কনস্টেবল রাহাতের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
ছুটিতে আসা একজন কনস্টেবল বরিশাল নগরীতে এসে মারতে মারতে যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার নাফিচুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি অন্য জেলায় কর্মরত একজন পুলিশ কনস্টেবল একজন সাংবাদিককে আটকে থানায় নিয়ে এসেছে ৷ এ ব্যাপারে আমি আমার সিনিয়র অফিসারদের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বরিশাল