নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে। বিদায়ের সময় সঙ্গে নিয়েছেন থানায় লাগানো এসি, টেলিভিশন, আইপিএস ও সোফা। থানার জিনিসপত্র নিজের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
থানার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যারা এসব জিনিসগুলো উপহার দিয়েছেন তারা এই বিষয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শুক্রবার (২৫ আগষ্ট) রাত ৯টার দিকে থানার পুলিশ সদস্য উদয় ও আরিফ নামের একজন লোক এবং ভ্যান চালকের সহায়তায় থানার জিনিসপত্রগুলো খোলা হয়। এরপর সেগুলো ভ্যানে করে ওসির কোয়ার্টারে নেওয়া হয়।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগষ্ট) পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার স্বাক্ষরিত স্মারক নং ৫১৭০/১ (৪৯) (আরওআই) আদেশে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তার এই বদলির আদেশের পর দিন শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে থানার এসি, টেলিভিশন, সোফা ও আইপিএস খুলে ওসির কোয়ার্টারে নেওয়া হয়। থানায় উপহার দেওয়া নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ীরা জানান, ‘এই জিনিসপত্র ব্যক্তিগতভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। থানায় যে ওসি আসবে সে ব্যবহার করবে এজন্যই জিনিসপত্রগুলো কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছিলো। তিনি এতো নিচু মন-মানসিকতার ওসি সেটা জানা ছিল না।’
থানার পুলিশ সদস্য উদয় বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে জিনিসপত্রগুলো খুলে নেয়া হয়েছে। এরপর সেগুলো ভ্যানে করে ওসির কোয়াটারে রাখা হয়েছে। নিকরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভপতি জুরান মণ্ডল বলেন, ‘থানার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এবং থানায় যেই ওসি আসুক তারা যেন সুবিধাটা ভোগ করতে পারে সেজন্য বালু মহলের টাকা দিয়ে জিনিসপত্রগুলো কিনে দেওয়া হয়েছিলো।
এটা থানার স্বার্থে দেওয়া হয়েছে কারও ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়। শুনেছি তিনি সেগুলো খুলে নিয়ে যাচ্ছেন, এটা ঠিক না। তাকে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া হয়নি, ওসির চেয়ারটাকে সম্মান করে দেওয়া হয়েছে।’
ভূঞাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. লুৎফর রহমান জানান, ‘ওসির টাকায় কেনা জিনিসপত্র হলে সে নিতেই পারে। এই বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।’ বদলি হওয়া ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেগুলো থানা থেকে খোলা হয়েছে সেগুলো ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে কেনা। সুতরাং সেগুলো আমি নিতেই পারি।’
জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, কারও অনুদানের টাকায় কিনে থাকলে সেগুলো ওসি নিতে পারেন না। যদি ব্যক্তিগত টাকায় কেনা হয় তাহলে নিতে পারবেন। যদিও এই বিষয়ে কিছুই জানি না।
জাতীয়, লাইফস্টাইল, শিরোনাম, সারাদেশ