নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, দ্রব্যমূল্য পরিকল্পিতভাবে বাড়ানো হচ্ছে। একটা মহল নির্বাচনের আগে পরিকল্পিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই- একটা সময় এমন ছিল যে, মনে করা হতো বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার এ দেশে হবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে না। বিচার কিন্তু ঠিকই হয়েছে, দোষীরা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছে।
তিনি বলেন, এবার যদি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও তার রাসূলের উসিলায় শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন, তবে যারা মজুদদার, যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের পেটে লাথি দিয়েছেন, যারা পরিকল্পিতভাবে সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্র মজুদ করে নিজের মুনাফা লুটার চেষ্টা করেছেন এবং যারা আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছেন, তারা জেনে রাখুন- বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে কাউকে ছাড়েন না।
বুধবার বিকাল ৪টায় বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সিদ্ধিরগঞ্জে শান্তি মিছিলের পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলের মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দুপুর ২টার মধ্যেই সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। শান্তি মিছিলে যোগ দিতে নানা রঙের ব্যানার ফেস্টুন ও সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে পিকআপভ্যানে করে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিলটি গোদনাইল থেকে শুরু হয়ে সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলপূর্ব সভায় শামীম ওসমান বলেন, আমরা খেলব, তো কাদের সঙ্গে খেলব। খেলার মাঠে তো কেউ নাই। ওরা (বিএনপি-জামায়াত) রাতের বেলায় চোরের মতো নামে। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে। ওদের তো আমরা মানুষ মনে করি না। আমরা মনে করি তারা ইবলিশ শয়তানের বংশধর। কারণ যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে তারা আর যাই হোক মানুষ হতে পারে না।
শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশকে প্যালেস্টাইন বানাতে বিএনপিকে ব্যবহার করা হয়েছে। একটি মহল চেয়েছিল এই দেশকে প্যালেস্টাইন বানিয়ে, এখানে তাদের সামরিক ঘাঁটি বানাতে। কিন্তু শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে সেই স্বপ্ন ওদের পূরণ হবে না।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অন্তত ২০০ আসনে বিজয়ী হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা সজাগ থাকবেন, সামনের ৮-১০ দিন আরও ক্রাইসিস (সংকট) সৃষ্টির চেষ্টা করা হবে। শয়তান যেমন আল্লাহর রহমতের সঙ্গে পারে না, ওই অপশক্তিরাও শেখ হাসিনার সঙ্গে পারবে না। আল্লাহর রহমত তার সঙ্গে আছে, সামনে বিজয় সুনিশ্চিত। আগামী ৭ ডিসেম্বরের পর থেকে দিন গণনা শুরু করেন। জাতির পিতার কন্যা সব কিছু ছাড় দেবেন, কিন্তু যারা জনগণের পেটে লাথি দেয়, যারা জনগণকে কষ্ট দেয়, সে যেই হোক না কেন, এমনকি আমি শামীম ওসমান হলেও তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ছাড় দেবেন না। তাদের বুকের উপর পাড়া দেবেন তিনি, এটা আমার বিশ্বাস।
শামীম ওসমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি নির্বাচনের আগে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম আমার ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কী অবস্থা। আজ পরীক্ষা ছিল সিদ্ধিরগঞ্জের। আজকের মিছিলে সিদ্ধিরগঞ্জের নেতাকর্মীরা ছাড়া অন্য এলাকার নেতাকর্মীদের আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। আমি যা দেখলাম, তাতে আমি আপনাদের কাছে জীবনভর কৃতজ্ঞ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন, নাসিক কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, মতিউর রহমান মতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সম্রাট, সাধারণ সম্পাদক রাসেল প্রধান, সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, যুবলীগ নেতা আহমেদ কাওসার, শাহরিয়ার রহমান বাপ্পি প্রমুখ।
সারাদেশ