রাত ১২:৫৭ ; মঙ্গলবার ; ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
facebook Youtube google+ twitter
×

বিক্ষোভ দমনে ইন্টারনেট বন্ধ কতটা কার্যকর?

৫:১৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

 

এর আগে গত ১৭ জুলাই বুধবার মধ্যরাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত পৌনে নয়টায় যখন পুরোপুরিভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়, তখনও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছিল বিক্ষোভ ও সহিংসতা।

 

হঠাৎ করে ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ওই রাতে মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছিলো না খুব একটা। দেশের ভেতর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়েছিলেন ব্যবহারকারীরা।

 

এই আন্দোলন ঘিরে সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ বাঁধে পরদিন শুক্রবার। এই দিন রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি জায়গায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটে।

 

ইন্টারনেট বন্ধ থাকাকালীন দেশের বাইরে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্টারনেট বন্ধ করে সাময়িকভাবে উত্তেজনা দমন করা গেলেও বিক্ষোভ নিরসন সম্ভব নয়। বরং এই সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সংঘাত বেড়েছে বলেও মনে করেন কেউ কেউ।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান বলেন, ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে বিপ্লব দমন করা যায় না। বরং এগুলো চালু রেখে রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে গুজব কিংবা বিক্ষোভ নিরসনে কাজ করতে হয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমীন আহমেদ বলেন, যতদিন ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ ছিল মানুষ বিকল্প হিসেবে ভিপিএন ব্যবহার করেছে। এসময় ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি আরও বেশি ছড়িয়েছে।

 

সাধারণ মানুষকে ভিপিএন’র মাধ্যমে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে বিরত থাকতে বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। তবে এই সময়েও ফেসবুক ব্যবহার করে বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছেন তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

 

তবে এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই ঘটেছে এমনটা নয়। প্রতিবাদ, ভিন্নমত কিংবা বিক্ষোভ দমনে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নজির আছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের।

 

মিশরে ২০১১ সালের বিপ্লব এবং ২০১৬ সালের ব্যর্থ তুর্কি সামরিক অভ্যুত্থানের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করতে দেখা যায়। ভারতেও বিভিন্ন সময় ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনা ঘটেছে। তবে বাংলাদেশে যত দীর্ঘ সময় ধরে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল এটি বেশ বিরল।

 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক ক্লাউডফ্লেয়ারের আউটেজ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারনেট বিভ্রাটের শুরুতে আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া। ২৫ জুলাই দেশটিতে কয়েক ঘণ্টার জন্য সরকারের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। সিরিয়ার পরেই বাংলাদেশ।

 

১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ দেখানোর বিষয়টি উল্লেখ করে ক্লাউডফ্লেয়ার। সেখানে সরকারের নির্দেশে বন্ধের বিষয়টি বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গণতন্ত্র সুসংহত নয়, এমন দেশগুলোতে এ রকম পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

 

রাশেদা রওনক খান বলেন, যে সব দেশে রাজতন্ত্র রয়েছে বা গণতন্ত্র সুসংহত নয় সেখানে ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুব সার্ভিলেন্সের মধ্যে রাখা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক দেশে ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে বিক্ষোভ বন্ধ করা যৌক্তিক সমাধান না।

 

এর আগে, বাংলাদেশে বেশ কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করা হলেও এমন ব্যাপক পরিসরে ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনা ঘটেনি।

 

প্রায় ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের এগুলো চালু করা হয়।

গত ২৪ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারেনেট এবং ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও বন্ধ ছিল কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

 

বুধবার এসব আনুষ্ঠানিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে বৈঠক করে সরকার।

 

ওই বৈঠক শেষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখার কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।

 

তিনি জানান, সাম্প্রতিক সহিংসতার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা ও সাজানো খবর ছড়ানো হয়েছে। এসব খবরের বিষয়ে এসব সামাজিক মাধ্যমকে জানানো হলেও তারা এর মাত্র ২০ মাত্র শতাংশ সরিয়েছে, বাকিটা সরায়নি।

 

সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে তাদের কাছে আপত্তি জানানোর পরও সেগুলো না সরানোয় এতদিন বন্ধ ছিল ফেসবুক-ইউটিউবসহ এসব সামাজিক মাধ্যম।

তবে ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের কারণে ব্যবসায়িক নানা ক্ষতির বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে।

 

বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে পলক বলেন, আমাদের ফ্রিল্যান্সার, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়িক সম্প্রদায়, স্কুল-কলেজের ছাত্র-শিক্ষক, গবেষকদের জন্য এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। সব কিছু চিন্তা করেই আমরা এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

 

প্রায় দুই সপ্তাহ পর বুধবার দুপুরের পর থেকেই ভিপিএন ব্যবহার ছাড়াই ফেসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারছিলেন ব্যবহারকারীরা।

 

তথ্যসূত্র: বিবিসি।

জাতীয়, সারাদেশ
[addthis tool="addthis_inline_share_toolbox_nev1"]

আপনার মতামত লিখুন :

প্রকাশক ও সম্পাদক: এম.জাহিদ
যুগ্ম সম্পাদক: মোঃ আরিফ খান
বার্তা সম্পাদক: আরিফুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদকঃ শুভ কুন্ডু
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ জহিরুল ইসলাম
মোবাইলঃ ০১৭১২-৬৮৮৬৬১
বার্তা বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ভুইয়া ভবন (৩য় তলা) ফকিরবাড়ী রোড, বরিশাল -৮২০০

ই-মেইল: formalnewsbsl@gmail.com
টপ
  বরিশালের তরুণ  সাংবাদিক এম. জাহিদ এর জন্মদিন আজ   বাবুগঞ্জে স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়াই কাল হলো সোলায়মানের!   শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন   বরিশালে ফরচুন সুজের শ্রকিদের ওপর গুলি বর্ষণ, পুলিশসহ আহত ১০   যায়যায়দিন ব‌রিশাল ব্যুরো অ‌ফি‌সের রি‌পোর্টার হ‌লেন এম.জাহিদ   শ্রমিকদের ওপর হামলায় সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল   ‘হিট স্ট্রোকে’ এক সপ্তাহে ১০ জনের মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর   বরিশালে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে আড্ডা দেয়ায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আটক   সরকারকে ক্ষমতায় রেখে জনগণের মুক্তি সম্ভব না: চরমোনাই পীর   বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় শাম্মী-পঙ্কজ অনুসারীদের সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু   বরিশালে ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু   প্রতারক মাকসুদকে ধরিয়ে দিন   বরিশালে কাবিনের টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় পালালো প্রেমিক   এস.এম জাকির হোসেনের মায়ের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের শোক   ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বরিশালে সাংবাদিকতায় আলো ছড়িয়েছেন এসএম ইকবাল   বরিশালের সেই মাদক সম্রাট রাসেল মেম্বর এবার ইয়াবার বড় চালানসহ গ্রেপ্তার   নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘বিরক্ত’ জেলেরা, তবুও ছাড়তে পারেন না পেশা   আওয়ামী লীগ দেশকে অনিবার্য সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে: চরমোনাই পির   এক সপ্তাহ পরেই শীতের আমেজের আভাস   আবার সরকারে এলে ফরিদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো: প্রধানমন্ত্রী