আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে একে একে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব অপরাধের তথ্য। তার অপরাধের ফিরিস্তি এত দূর পৌছেছিল যে তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছিল পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল। তারপরেও বারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, ২০০৭ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। হুন্ডি ব্যবসা, সোনা চোরাচালান, হত্যা, গুমসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে দেশের আদালতেও তখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। এরপরও পলাতক থাকায় ২০০৮ সালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দেন, তাতেও তিনি নিজের বিরুদ্ধে ২১টি মামলা থাকার কথা উল্লেখ করেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মামলাগুলোর কোনোটিতে খালাস, কোনোটিতে অব্যাহতি পান তিনি, সে বিষয়টিও হলফনামায় তুলে ধরেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রকাশ্যে আসেন আনোয়ারুল আজীম আনার। কিছুদিনের মধ্যেই ইন্টারপোলের লাল তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
আনোয়ারুল আজীম আনারের বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগের মধ্যে তিনি কীভাবে তিন দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন; তাঁকে দেশের অন্যতম একটি প্রধান দল আওয়ামী লীগই–বা কীভাবে মনোনয়ন দিয়ে আসছে, এখন এসব প্রশ্ন সামনে আসছে।
এদিকে, চিকিৎসার কথা বলে ভারতে গিয়ে খুন হওয়ার পর জানা যায়, এমপি আনার হত্যায় অংশ নেওয়া ৬ কিলারই বাংলাদেশি। এমনকি যে ফ্ল্যাটে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেটাও এক বাংলাদেশির। হত্যা করার পর এমপি আনারের লাশ কয়েক টুকরা করা হয়। পরে কলকাতা পুলিশের সহায়তায় ট্রলির মধ্যে পাওয়া গেছে খন্ড খন্ড মরদেহ।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশের কোনো এমপি ভারতে গিয়ে খুন হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। তাই এটিকে বিরল ঘটনা বলছে তারা।
জাতীয়, সারাদেশ, হোম