ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ‘Celebrating Women’s Dignity and Pride 2025’ (নারীর মর্যাদা ও গৌরব উদযাপন ২০২৫) শীর্ষক উৎসব পালিত হয়েছে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় আয়োজিত এ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজারেরও বেশি নিবন্ধিত নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম ধাপে ৫০০ জনের হাতে সরাসরি প্রতিরোধ ও সম্ভ্রমের প্রতীক হিসেবে হিজাব তুলে দেয় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। এছাড়া অন্য নারী শিক্ষার্থীদের চকলেট ও কলম উপহার দেওয়া হয়। সংগঠনটি জানিয়েছে দ্বিতীয় ধাপে নিবন্ধিত বাকি শিক্ষার্থীদের হিজাব দেওয়া হবে।
দিনব্যাপী আয়োজনে হিজাবোফোবিয়া তথা হিজাব বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা দিনভর তাদের অনুভূতির কথা তুলে ধরেন। তারা লেখেন-‘হিজাব হোক প্রতিরোধের প্রতীক’, ‘একমাত্র হিজাবই নারীর সর্বোচ্চ সম্মানের প্রতীক’, ‘হিজাব হীনমন্যতার প্রতীক নয় বরং মুসলিম আত্মপরিচয় রক্ষায় হিজাব আমার দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রতীক’, ‘আমার সোনার বাংলায় হিজাব বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের অনন্য এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন হিজাব পরিহিত তরুণীরা। হিজাবফোবিয়ার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নারীর মর্যাদার জন্য এ ধরনের আয়োজন সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সেই সঙ্গে উৎসবে নারীরা সাদা কাপড়ের ব্যানারে হিজাবের পক্ষে নিজেদের অভিমত তুলে ধরেন। তারা বলেন, ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা যেমন সুরক্ষিত, তেমনি নারী সুরক্ষিত হিজাবের মধ্যে। সুন্দর উদ্যোগ। নারীর মর্যাদার জন্য এমন আয়োজন প্রশংসনীয়, এমন বারবার হোক।
তারা আরও লেখেন, হিজাব মুসলিম নারীর অহংকার, সৌন্দর্য ও স্বীকৃত পরিচয়। এছাড়া হিজাব পরিধানকারীকে কান খোলার নাম করে হয়রানি বন্ধের দাবিও জানিয়েছেন উৎসবে আগত শিক্ষার্থীরা।
তামিমা নামের এক ঢাবি ছাত্রী লেখেন, ‘অত্যন্ত সময়োপযোগী আয়োজন। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। হিজাবফোবিয়ার বিরুদ্ধে ও আমাদের হিজাবের অধিকার আদায়ের পক্ষে এ যাত্রা অব্যাহত থাকুক। এমন আয়োজন বারবার হোক, হিজাবের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ুক’।
হিজাব পাননি এমন একজন ছাত্রী লিখেছেন, ‘হিজাব পাইনি তবুও এই প্রোগ্রাম নিয়ে সন্তুষ্ট’। আরেকজন লিখেছেন, ‘আমি রেজিস্ট্রেশন করিনি কিন্তু দেখে ভালো লাগছে’।
উম্মে সালমা লিখেছেন, ‘Celebrating Women’s dignity and pride-2025 আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ’।
মাহরিনা নামের এক ঢাবি শিক্ষার্থী লেখেন, ‘হিজাব আমার সৌন্দর্য’।
সুচি নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘হিজাব হীনমন্যতার বিষয় নয়, হিজাব নারীর সৌন্দর্য, হিজাব খোলার নিয়ম বন্ধ করা হোক’।
ঢাবি ছাত্রী কলি কানম লেখেন, ‘হিজাব হীনমন্যতার প্রতীক নয়, মুসলিম আত্মপরিচয় রক্ষায় হিজাব আমার দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রতীক’। আরেকজন লিখেছেন, ‘হিজাব বা নিকাবি মানেই ছাত্রী সংস্থা না’।
কল্পনা নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এই বাংলায় ধর্মের বৈষম্য দূর হোক’। সারা নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘আমি হিজাব পছন্দ করি’।
সুমাইয়া লিখেছেন, ‘হিজাবে মেয়েদের সৌন্দর্য বাড়ে বৈ কমে না’। তাহমিনা তামান্না লিখেছেন, ‘হিজাব হোক সাহস, হিজাব হোক শক্তি’। তুলি নামের আরেক ছাত্রী লিখেছেন, ‘নারীর পর্দা রক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার নিজের সাহস। পরিস্থিত অনুকূলে না থাকলেই নিকাব সরিয়ে ফেলার মানসিকতা আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা’।
আইরিন সুলতানা লেখেন, একমাত্রই হিজাবই নারীর সর্বোচ্চ ফ্যাশন, নারীর সম্মানের অলংকার ‘।
ঢাবির ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী তাসমিয়া লিখেন, ‘হিজাবের অধিকার অর্জনের দিনগুলো দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি। এটা ছিল স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো একটা ঘটনা’।
মায়ান লেখেন, ‘হিজাব হোক প্রতিবাদের প্রতীক’। হাফসা লিখেছেন, ‘হিজাব দিয়ে আমি বিশ্ব জয় করব ইনশাআল্লাহ’। নিফা লিখেছেন, ‘হিজাব হলো আমার শক্তি’।
ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘হিজাববিরোধী শিক্ষককে পূর্ণ অব্যাহতি দিতে হবে’।
সুইটি নামের আরেক ছাত্রী লিখেছেন, খুবই ভালো উদ্যোগ মাশাআল্লাহ। আরও এগিয়ে যেতে চাই পর্দার অধিকার আদায়ের সদিচ্ছা নিয়ে’।
লেখক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং বিপ্লবী ফ্রান্টজ ওমর ফ্যাননের একটি উদ্ধৃতি ব্যানারে লিখেছেন ঢাবির আরেক শিক্ষার্থী। সেখানে লেখা হয়েছে- ‘নারীরা যারা মুখ না দেখেও দেখে, উপনিবেশ স্থাপনকারীদের হতাশ করে।
ঢাবি ছাত্র শুভ্র লেখেন, ‘ভালো উদ্যোগ। ইনশাআল্লাহ সব বোনের হিজাব পরার তৌফিক দান করুন’।
আইইআর বিভাগের শিক্ষার্থী চৈতী বলেন, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ, হিজাব বা পর্দা করতে সবাই অনুপ্রাণিত হবে ইনশাআল্লাহ’।
ফারজানা ইসলাম লেখেন, ‘খুবই সুন্দর উদ্যোগ। হিজাবফোবিয়ার বিরুদ্ধে যথাযথ উদ্যোগ। হিজাব আমাদের অধিকার’।
ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী দিপা লিখেছেন, ‘হিজাব, পর্দা আমার জীবনকে পরিবর্তন করেছে, আলহামদুলিল্লাহ’।
রাজনীতি