রাত ১০:৪৫ ; বৃহস্পতিবার ; ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
facebook Youtube google+ twitter
×

ডিজিটাল আইন একটি দেশের কালো আইনের কপি পেস্ট

৪:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদল করে সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হলেও মূল বিষয় একই। এ আইনটি বাতিলের দাবি থাকলেও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এখনো আইনটি বাতিলের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

 

সম্পাদক পরিষদের সদস্যরা ৩ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে যেসব আইনে সাংবাদিক নিপীড়নের ধারা আছে তা এখনই বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করে। পরে তারা প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি এ তথ্য জানিয়ে বলেন, আমরা সংবিধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইনে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি।

 

অন্যদিকে ডিএসএ (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট) ভিকটিমস নেটওয়ার্ক এখনো সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের উদ্যোন না নেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ আইন বাতিলের জন্য তারা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছে।

 

দেশের সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিরোধিতার মধ্যেই ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে পাশ হয়েছিল ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। তার পর সেই প্রতিবাদ সামাল দিতে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর করা হয় সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। আসলে এ আইনটি পুরনো আইনই নতুন নামে করা হয়। তেমন কোনো পার্থক্য ছিল না।

 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, এটি একটি কালা কানুন। তাই আমরা এ আইনটি বাতিলের দাবি করেছি শুরু থেকেই। এ আইনের উদ্দেশ্য হলো— বাকস্বাধীনতা, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও ভিন্নমতের মানুষকে দমন। এ আইনটি হয়রানির কাজেই সরকার ও সরকারের লোকজন ব্যবহার করেছে।

 

তার কথায়, আইনটি বাতিল করা প্রয়োজন। তবে আগের মামলাগুলো কী হবে। সবই কী প্রত্যাহার হবে, না যাচাই-বাছাই করা হবে তার জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন। আর যদি আইন ও সাংবিধানিক সংস্কার হয়, তাহলে একসঙ্গেই করা যায়। কিন্তু সাইবার অপরাধ দমনে নগারিকদের জন্য প্রয়োজনীয় আইন লাগবে।

 

সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্ট্যাডিজ বলছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট এক হাজার ৩৬টি মামলা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। তাতে আসামি ৪৫২০ জন। তার মধ্যে ১৫৪৩ জনের পেশাগত পরিচয় পাওয়া গেছে। ২৯৮৬ জনের পেশাগত পরিচয় পায়নি সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্ট্যাডিজ। যাদের পেশাগত পরিচয় জানা গেছে, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতারাই সংখ্যায় বেশি, ৪৯৫ জন। তারপরই রয়েছে সাংবাদিক ৪৫১ জন। এ ছাড়া সরকারি চাকরি, চিকিৎসক, এনজিওকর্মী, আইনজীবী, ছাত্র ও শিক্ষক রয়েছেন। শতাংশ হিসাবে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ৩২ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং সাংবাদিক ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ। এসব মামলায় আসামিদের মধ্যে ২৮ জন আছেন, যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে।

 

মামলায় ১৫৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪৩ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ছাত্র ১০৪ জন এবং সাংবাদিক ৯৭ জন।

 

মামলা দায়েরকারীদের মধ্যে শীর্ষে আছেন র্যাব, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতারাই সবচেয়ে বেশি মামলা করেছেন, ৩৩৪টি। যেসব রাজনৈতিক লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা প্রায় সবাই বিরোধী নেতাকর্মী।

 

এসব মামলায় শাস্তি হয়েছে খুবই কম। তারপরও জেলে থাকতে হয়। হয়রানির শিকার হতে হয়। এ মামলার আসামি লেখক মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে কারাগারেই মারা যান। আর্টিক্যাল ১৯ বলছে— শুধু ২০২১ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাংলাদেশে যত মামলা হয়েছে, তার মধ্যে ৪০ শতাংশ মামলাই হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামে কটূক্তির কারণে।

 

আর্টিক্যাল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মঞ্জুর ই আলম বলেন, আইন সংস্কারের কথা সরকার বলছে। তারা সংবিধান সংস্কারের কথা বলছে। তবে তাদের অগ্রাধিকার কোথায় তা আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। সরকার যে এ আইনটি বাতিল বা সংস্কারের দ্রুত কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে তা আমার জানা নেই। তবে আমি দ্রুত উদ্যোগ চাই।

 

তিনি বলেন, তবে এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। পুরোনো মামলাগুলোর কী হবে। সাইবার অপরাধ দমনের আইন কেমন হবে। সব কিছু ভাবতে হবে। তবে প্রচলিত আইনটি রাখা যাবে না। এটা নিবর্তনমূলক আইন।

 

সরকারি দুই-একজন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন সংশোধনের কথা বললেও তার প্রক্রিয়া এখনো স্পষ্ট নয়। আইন ও সালিশকেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল বলেন, আমি যত দূর জানি এই আইনটি সংশোধন করা হবে। আইন উপদেষ্টা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে এটা দ্রুত হওয়া প্রয়োজন।

 

ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, এই আইনটিতে পুলিশকে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মামলা ও গ্রেফতারের ব্যাপারে। তারা এই আইনের আওতায় অনুভূতির কথা বলে যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। আবার যে কেনো সংবাদমাধ্যমের প্রকাশনা বা সম্প্রচার কৌশলে বন্ধ করে দিতে পারে। সাধারণ মানুষের মোবাইল ফোন চেক করতে পারে। এই আইনটি ফিলিপাইনের একটি কালো আইনের কপি পেস্ট। ওই দেশের আদালত তাদের দেশে আইনটি বাতিল করলেও আমাদের দেশে এখনো বহাল আছে।

 

আর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বেশ কিছু ধারা উপধারা আছে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে যায়। আমরা আগেও ওই ধারাগুলো বাতিলের দাবি করেছি। এখনো বাতিলের দাবি জানাই।

 

তবে এ বিষয় নিয়ে চেষ্টা করেও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্য জানা যায়নি। -খবর ডয়েচে ভেলের।

জাতীয়
[addthis tool="addthis_inline_share_toolbox_nev1"]

আপনার মতামত লিখুন :

প্রকাশক ও সম্পাদক: এম.জাহিদ
যুগ্ম সম্পাদক: মোঃ আরিফ খান
বার্তা সম্পাদক: আরিফুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদকঃ শুভ কুন্ডু
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ জহিরুল ইসলাম
মোবাইলঃ ০১৭১২-৬৮৮৬৬১
বার্তা বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ভুইয়া ভবন (৩য় তলা) ফকিরবাড়ী রোড, বরিশাল -৮২০০

ই-মেইল: formalnewsbsl@gmail.com
টপ
  বরিশালের তরুণ  সাংবাদিক এম. জাহিদ এর জন্মদিন আজ   বাবুগঞ্জে স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়াই কাল হলো সোলায়মানের!   শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন   বরিশালে ফরচুন সুজের শ্রকিদের ওপর গুলি বর্ষণ, পুলিশসহ আহত ১০   যায়যায়দিন ব‌রিশাল ব্যুরো অ‌ফি‌সের রি‌পোর্টার হ‌লেন এম.জাহিদ   শ্রমিকদের ওপর হামলায় সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল   ‘হিট স্ট্রোকে’ এক সপ্তাহে ১০ জনের মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর   বরিশালে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে আড্ডা দেয়ায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আটক   সরকারকে ক্ষমতায় রেখে জনগণের মুক্তি সম্ভব না: চরমোনাই পীর   বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় শাম্মী-পঙ্কজ অনুসারীদের সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু   বরিশালে ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু   প্রতারক মাকসুদকে ধরিয়ে দিন   বরিশালে কাবিনের টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় পালালো প্রেমিক   এস.এম জাকির হোসেনের মায়ের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের শোক   ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বরিশালে সাংবাদিকতায় আলো ছড়িয়েছেন এসএম ইকবাল   বরিশালের সেই মাদক সম্রাট রাসেল মেম্বর এবার ইয়াবার বড় চালানসহ গ্রেপ্তার   নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘বিরক্ত’ জেলেরা, তবুও ছাড়তে পারেন না পেশা   আওয়ামী লীগ দেশকে অনিবার্য সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে: চরমোনাই পির   এক সপ্তাহ পরেই শীতের আমেজের আভাস   আবার সরকারে এলে ফরিদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো: প্রধানমন্ত্রী