বরগুনার আমতলী পৌর শহরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক পুরুষ শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মী আরেক নারী শিক্ষককে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগের পর ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনা এভাবে চলতে থাকলে ওই শিক্ষিকা আত্মসম্মান বাঁচাতে আত্মহত্যারও হুমকি প্রদান করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাইনুল ইসলাম বিদ্যালয় চলাকালে ওই বিদ্যালয়ের আরেক সহকর্মী নারী শিক্ষককে একা পেয়ে প্রায়ই নানা ধরনের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। সহকর্মীর এ ধরনের আচরণে বিব্রত হলেও লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে চুপ করে থাকেন ওই শিক্ষিকা।
একপর্যায়ে মাইনুলের যৌন হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষিকা সহকর্মী মাইনুলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষিকা এ ঘটনা এভাবে চলতে থাকলে আত্মসম্মান বাঁচাতে তিনি আত্মহত্যার হুমকি প্রদান করেন।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নিশ্চিত করেন। লিখিত অভিযোগের পর বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামকে। সদস্য করা হয়েছে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল আমিনকে।
যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষিকা বলেন, শিক্ষক মাইনুল ইসলাম বিদ্যালয়ে আমাকে একা পেলেই নানা ধরনের অঙ্গভঙ্গি করে অশালীন কথাবার্তা বলত এবং কুপ্রস্তাব দিত। প্রথম দিকে সহকর্মী ভেবে কিছু না বললেও দিন দিন তার মাত্রা বেড়ে যায় এবং এ থেকে তাকে নিবৃত্ত থাকতে বললেও তার মাত্রা আর বেড়ে যায়। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে আমি মাইনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেই। মাইনুল শুধু আমাকেই নয় বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির নারী শিক্ষার্থীদেরও যৌন হয়রানি করতেন। অনেক মেয়েকে অভিভাবকরা মাইনুলের ভয়ে এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে গেছেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সহকর্মী শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে কেন করা হয়েছে তা আমি জানি না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছু বলব না, যা বলার তদন্ত কমিটির সামনেই বলব।
আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষিকাকে আরেক সহকর্মী শিক্ষক মাইনুল ইসলাম যৌন হয়রানি করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগের পর বরগুনার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। চিঠি হাতে পেয়েছি। খুব দ্রুত তদন্ত কাজ শুরু করা হবে।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সারাদেশ