নিজস্ব প্রতিবেদক :: বাবুগঞ্জে পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় এক বাকপ্রতিবন্ধী কিশোর এবং এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আহত কলেজছাত্রকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে এবং বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরকে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় এবং ইউএনওর কাছে আলাদা দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহত কলেজছাত্র ইয়াসিন আরাফাত আগরপুর ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের শিলনদিয়া গ্রামের আবদুল খালেক হাওলাদারের ছেলে। এদিকে বাকপ্রতিবন্ধী কিশোর সজল উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের রাজকর গ্রামের সালেক হাওলাদারের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার কলেজের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আগরপুর ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ইয়াসিন আরাফাতকে ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয় তার সহপাঠী ওবায়দুল। এনিয়ে তর্কের জের ধরে বাড়ি ফেরার সময় পথরোধ করে ইয়াসিনকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে তাঁর ৩ সহপাঠী। এসময় রডের আঘাতে তাঁর মাথা থেতলে যায় ও কয়েকটি দাঁত পড়ে যায়। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আগরপুর হালিমা-মান্নান ক্লিনিকে এবং পরে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতের ভাই রাকিব হোসেন হাওলাদার জানান, রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধের জের ধরে ধাক্কা লাগার অজুহাত তুলে ইয়াসিনের সহপাঠী ওবায়দুল, রনি এবং তানভীর পরিকল্পিতভাবে ওই সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে বাবুগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত ৩ জনকে আসামী করে একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে রাজকর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাঠে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুটবল খেলার সময় বাকপ্রতিবন্ধী সজলের দলের সাথে প্রতিপক্ষ দলের ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সজলকে রাস্তায় একা পেয়ে বেধড়ক মারপিট করা হয়। সজলের খালা পারুল বেগম জানান, মা-বাবাহারা এতিম ও বোবা সজল তার কাছেই থাকে। অসহায় সজলকে রাস্তায় একা পেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ইউনুস সরদারের সন্ত্রাসী ছেলে মশিউর এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে সজলকে উদ্ধার করে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পারুল বেগম। অভিযুক্ত মশিউরের বিরুদ্ধে এর আগেও আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় মারামারি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) অলিউল ইসলাম বলেন, ‘কলেজছাত্রকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলার জন্য একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। আহতের মেডিকেল রিপোর্ট পেলে মামলা রেকর্ড করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া বাকপ্রতিন্ধীর ওপরে হামলার ঘটনাটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে হওয়ায় ইউএনও তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
বরিশাল, বরিশাল বিভাগ