নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আজ শুভ বিজয়া দশমী। এই দিনেই দেবী মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে আজ শুধুই বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর।
গত ১৪ অক্টোবর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী পক্ষের। আর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ২০ অক্টোবর শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর হাসি-আনন্দ আর পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে কেটে গেছে চার দিন। আজ সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হবে দেবী দুর্গাকে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়েই শেষ হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
সনাতনীদের পুরাণ মতে, বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন ‘দেবীবরণ’। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদুর খেলা নামে পরিচিত।
পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যে এসেছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ফিরবেনও ঘোটকে। এই বাহনের ফল হল ‘ছত্রভঙ্গ’। বেতাগী সার্বজনীন কালী মন্দিরের পুরোহিত অশোক চক্রবর্তী বলেন, ঘোটকে যেহেতু দেবীর আগমন এবং গমন, সেটি অশুভ বার্তা, তবে ভক্তের আরাধনায় দেবীর মন তুষ্ট হলেই মিলবে শান্তি। মহানবমীতে তাই দেবীর কাছে ভক্তদের প্রার্থনা যেন মায়ের মন ভক্তের জন্য সহানুভূতিশীল হয়। অশুভের বিনাশ হয়, শুভশক্তির জয় হয়।
গতকাল সোমবার মহানবমীতে প্রতিটি মণ্ডপ ও মন্দিরে দেবীর বন্দনায় ছিল বিষাদের সুর। ঢাকঢোল, কাঁসর ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্যে দেবীর বিভিন্ন মন্দির-মণ্ডপে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল আগের তিন দিনের তুলনায় অনেক বেশি। অনেক মণ্ডপে মানুষের ভিড় ছিল উপচে পড়া। বেতাগী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ধীমান কান্তি গুহ বলেন,’ বিকেলে শোভাযাত্রার মাধ্যমে উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায় জানানো হবে। ভক্তদের প্রার্থনা যেন মায়ের মন ভক্তের জন্য সহানুভূতিশীল হয়। অশুভের বিনাশ হয়, শুভশক্তির জয় হয়।
অনলাইন ডেস্ক, বরিশাল বিভাগ, সারাদেশ