নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের রাওঘা নূর আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যােিনজিং কমিটি গঠন উপলক্ষে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধি বাছাই সভায় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় জুয়েল (৪০) নামে এক অভিভাবক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত জুয়েলকে স্বজনরা উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এঘটনায় স্কুলের শিক্ষকদেরও জীবন নাশের হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। বুধবার সকালে এঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের রাওঘা গ্রামে অবস্থিত নূর আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটি গঠনের জন্য ২৯অক্টোবর তফসিল ঘোষনা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী বুধবার সকাল ১০টায় অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধি বাছাইয়ের জন্য প্রিজাইর্ডিং অফিসার আমতলী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. সেলিম মাহমুদের নেতৃত্বে বাছাই সভা শুরু হয়।
এসময় ওই সভায় পূর্ব পরিকল্পন অনুযায়ী একদল সন্ত্রাসীদের নিয়ে উপস্থিত হন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক। এসময় অভিভাবক সদস্য জুয়েল গাজীকে ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জান মিন্টু মল্লিক গালাগালি শুরু করেন এসময় জুয়েল গাজী প্রতিবাদ করলে তার উপর কিল ঘুষি এবং লাঠি দিয়ে দিয়ে পিটনো শুরু করেন।
একপর্যায়ে তার নেতৃত্বে শাহজাদা তালুকদার, শাখোয়াত তালুকদার, মাহবুবুর রহমান, ইউসুফ খা, মস্তফা গাজী ও জুয়েল গাজীর নেতৃত্বে ধারালো রামদা লাঠি নিয়ে জুয়েলকে কোপাততে এবং পিটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মারধরের আঘাতে জুয়েল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এসময় ধারালো রামদার কোপে জুয়েলের বাম হাত রক্তাব জখম হয়। এবং চাম্বল গাছের ভারি লাঠি দিয়ে জুয়েলের ডান হাত পিটিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এসময় জুয়েলের ডাক চিৎকার শুনে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
জুয়েলকে মেরেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী বিদ্যালয়ের আসবাব পত্র ভাংচুর করে। এসময় তারা বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের শিক্ষক পলাশ চন্দ্র , ধর্মীয় শিক্ষক মো. রুহুল আমিন ও সমাজ বিঞ্জান বিষয়ের শিক্ষক সুবর্না আক্তারকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে তাদের স্কুলে আসতে নিষেধ করেন।
আহত জুয়েল বলেন, আমি নূর আল-আমিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদে আবেদন করি। ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে আবেদন করতে নিষেধ করেন।
আমি তার নিষেধ অমান্য করায় আমার উপর তার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা করে। হামলায় আমার হাত ভেঙ্গে যায় এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আমি এঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক তার নেতৃত্বে জুয়েলের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে। এবং বলেন এটি তাদের পারিবারিক বিষয়।
বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সামসুল আলম হামলার কথা স্বীকার করে বলেন বিদ্যলয়ের অনেক আসবাব পত্র ভাংচুর করেছে এবং ৩জন শিক্ষকে জীবন নাশের হুমকিসহ তাদের বিদ্যালয়ে না আসার জন্য শােিয়ছে।
নিবার্চান পরিচালনা জন্য গঠিত প্রিজাইডিং অফিসার আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মো. সেলিম মাহমুদ বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধি বাছাই নিয়ে জুয়েল নামে এক অীভভাবক সদস্যসের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখোয়াত হোসেন তপু বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের আসবাব ভাংচুর এবং শিক্ষকদের জীবন নাশের হুমকির বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি ফোজদারী অপরাধের সামিল। এবিষয়ে আইনী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
পটুয়াখালী, বরিশাল বিভাগ