‘গোলা-বারুদে পোড়া’ বিশৃঙ্খল পৃথিবীর অর্থনীতিতে এবার নতুন সতর্কতা দিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বলছে, চলতি বছরে নির্বাচনের চাপে পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি। সোমবার থেকে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে এ হুশিয়ারি দিলেন আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
সোমবার এএফপির খবরে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে আয়োজিত ৫ দিনের এ সম্মেলন ঘিরে জর্জিয়েভা বলেন, ‘চলতি বছর নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত দেশগুলো বিশ্বের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।’
এ বছর প্রায় ৭৮টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জর্জিয়েভা বলেছেন, ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত বিশ্বের বহু দেশে কোটি কোটি মানুষ এই বছর নির্বাচনে ভোট দেবেন। বিভিন্ন দেশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার কারণে, জনসমর্থন নিশ্চিত করতে সরকারগুলোর ওপর ব্যয় বৃদ্ধি অথবা কর কমানোর জন্য একটি সম্ভাব্য চাপ রয়েছে।
জর্জিয়েভার মতে, আইএমএফের উদ্বেগ হলো, সারা বিশ্বের সরকারগুলো এই বছর নির্বাচনের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি কমাতে খুব বেশি বাজেট বরাদ্দ করছে না। যদি আর্থিক নীতি কঠোর করা হয়, কিন্তু রাজস্ব নীতি প্রসারিত করা হয়, তাহলে এই পদক্ষেপটি মুদ্রাস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে কার্যকর হবে না। এর ফলে আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে পারি। তবে পরিস্থিতি শিথিল করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে ধরে রেখেছে।
২০২৪ সালে তিনটি সুদের হার কমানোর পূর্বাভাসও দিয়েছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো বন্ধ করেছে। এই পদক্ষেপগুলো স্টক মার্কেট ব্যবসায়ীদের আগামী মাসগুলোতে আর্থিক নীতি সহজ করার সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও আশাবাদী করে তুলেছে। সুদের হার ধরে রাখার নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একটি নতুন আইএমএফ রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে, জর্জিয়েভা সতর্ক করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সারা বিশ্বে চাকরির নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে। বলেছেন, এআই উন্নত অর্থনীতির ৬০ শতাংশ চাকরিকে এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০ শতাংশ চাকরিকে প্রভাবিত করবে। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এআই কম প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন তিনি। ফলে এই প্রযুক্তি দেশগুলোর মধ্যে বৈষম্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
আন্তর্জাতিক