সন্ধ্যা ৭:১৭ ; রবিবার ; ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
facebook Youtube google+ twitter
×

বড় ছাড় গ্রুপভুক্ত ঋণখেলাপিদের

১:১৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২৪

খেলাপি ঋণের আদায় বাড়াতে এবং নতুন ঋণখেলাপি হওয়া ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তখনই খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কোনো গ্রুপভুক্ত পরিচালক, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলো খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বড় ছাড় পাবে।

আগের নিয়মে কোনো গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বা কোনো ব্যক্তি খেলাপি হলে ওই গ্রুপের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি নতুন ঋণ পেত না। খেলাপি ঋণ নবায়ন করে নতুন ঋণ নিতে হতো। এখন থেকে কোনো গ্রুপের কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বা পরিচালক খেলাপি হলেও ওই গ্রুপের খেলাপি কোম্পানি, পরিচালক বা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যরা ব্যাংক ও ফিন্যান্স কোম্পানি থেকে নতুন ঋণ নিতে পারবে।

এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সূত্র জানায়, মূলত বড় ঋণখেলাপিদের পক্ষে রাজনৈতিক চাপেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরছিল, ঠিক তখনই এমন সিদ্ধান্ত খেলাপি ঋণের ব্যাপারে এ ধরনের বড় ছাপের ফলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এটি খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উলটো যাত্রা। এতে খেলাপি ঋণ আদায় কমে যাবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি শনাক্ত হবে কম। একই সঙ্গে বেড়ে যেতে পারে খেলাপি ঋণের পরিমাণ।

সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত গ্রুপগুলোর জন্য ঋণখেলাপি হওয়ার প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। কারণ, বিদ্যমান নীতির কারণে এখন গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত খেলাপি হয় না, হলেও তা দ্রুত নবায়ন করে ফেলে। কারণ, গ্রুপের একটি কোম্পানি খেলাপি হলে একই গ্রুপের অন্য কোনো কোম্পানি নতুন ঋণ পাবে না। ফলে তাদের পুরো ব্যবসা আটকে যেতে পারে। এ কারণে গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত খেলাপি হয় না। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সার্কুলারের ফলে কোনো গ্রুপের কোনো কোম্পানি খেলাপি হলেও ওই গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলো নিয়মিতভাবেই নতুন ঋণ পাবে। ফলে গ্রুপের একটি কোম্পানি খেলাপি হলেও এতে কোনো সমস্যা হবে না। এ কারণে যেসব গ্রুপ অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তারা কোনো একটি ছোট বা কম গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিকে খেলাপি করে ওই ঋণ অন্য খাতে নিয়ে ব্যবহার করতে পারে। একই সঙ্গে নতুন ঋণও নিতে পারবে। এতে ঋণখেলাপি কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি গ্রুপের মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ আরও বেড়ে যাবে। জনগণের আমানত নিয়ে তা ফেরত না দেওয়ার প্রবণতাও বাড়বে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা হয়েছে- কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুক‚লে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনোরূপ নতুন ঋণ সুবিধা প্রদান করবে না। তবে একই আইনের অন্য একটি ধারার বিধান অনুসারে পরস্পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট গ্রুপভুক্ত কোনো খেলাপি ব্যক্তি বা ক্ষেত্রমতে প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে, তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি হওয়ার কারণে ওই গ্রুপভুক্ত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি বলে গণ্য হবে না। এরূপ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে মর্মে উল্লে­খ রয়েছে।

ওই আইনের ক্ষমতাবলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার জারি করে বলেছে, গ্রুপভুক্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা না হলে সেক্ষেত্রে গ্রুপভুক্ত অন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে নতুন ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এগুলো হচ্ছে- কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হলে ওই খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ব্যাংক কর্তৃক কোনোরূপ ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না। তবে গ্রুপভুক্ত খেলাপি কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত বা তালিকাভুক্ত না হলে ওই গ্রুপভুক্ত অন্য কোনো বা সব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে নতুন ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে। তফশিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রুপভুক্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে চূড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসাবে তালিকাভুক্ত করার পর ওই তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ঋণগ্রহীতা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপিল করলে ওই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করা যাবে না। গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে এরূপ ঋণ সুবিধা দেওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে গ্রুপভুক্ত খেলাপি ঋণ হিসাবটি বিদ্যমান আইন বা নীতিমালা অনুসরণ করে সমন্বয় বা নিয়মিত করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে খেলাপি ঋণ হিসাব সমন্বয় বা নিয়মিত করতে ব্যর্থ হলে অথবা ঋণ হিসাব নিয়মিতকরণের পর পুনরায় খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হলে গ্রুপভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে নতুন করে আর কোনো ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নেওয়ার লক্ষ্যে তফশিলি ব্যাংক কর্তৃক তাদের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে আবেদন করতে হবে এবং এক্ষেত্রে ঋণ সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গৃহীত সিদ্ধান্তের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলকৃত আবেদনপত্রের সঙ্গে গ্রুপভুক্ত খেলাপি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি হওয়ার কারণগুলো উল্লে­খ করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ওই খেলাপি ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ সিআইবি রিপোর্ট সংযুক্ত করতে হবে। সিআইবিতে রিপোর্টিংয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্দেশনা জারির আগ পর্যন্ত ওই খেলাপি ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা নন মর্মে সংশ্লিষ্ট সব ঋণদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করত তা সংযুক্ত করতে হবে।

এতদ্বিষয়ে ব্যাংকের আবেদন নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময় সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা দলিলাদি ব্যাংক কর্তৃক সরবরাহ করতে হবে। পূর্বানুমোদন দেওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রুপভুক্ত খেলাপি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি খেলাপি হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ, ঋণ আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতার ব্যাংক হিসাব ও প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এবং পরিদর্শন দলের বিবেচনায় প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি পর্যালোচনার লক্ষ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। এরূপ পূর্বানুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

অর্থনীতি
[addthis tool="addthis_inline_share_toolbox_nev1"]

আপনার মতামত লিখুন :

প্রকাশক ও সম্পাদক: এম.জাহিদ
যুগ্ম সম্পাদক: মোঃ আরিফ খান
বার্তা সম্পাদক: আরিফুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদকঃ শুভ কুন্ডু
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ জহিরুল ইসলাম
মোবাইলঃ ০১৭১২-৬৮৮৬৬১
বার্তা বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ভুইয়া ভবন (৩য় তলা) ফকিরবাড়ী রোড, বরিশাল -৮২০০

ই-মেইল: formalnewsbsl@gmail.com
টপ
  শ্রমিকদের ওপর হামলায় সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল   ‘হিট স্ট্রোকে’ এক সপ্তাহে ১০ জনের মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর   বরিশালে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে পার্কে আড্ডা দেয়ায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আটক   সরকারকে ক্ষমতায় রেখে জনগণের মুক্তি সম্ভব না: চরমোনাই পীর   বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় শাম্মী-পঙ্কজ অনুসারীদের সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু   বরিশালে ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু   প্রতারক মাকসুদকে ধরিয়ে দিন   বরিশালে কাবিনের টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় পালালো প্রেমিক   এস.এম জাকির হোসেনের মায়ের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের শোক   ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বরিশালে সাংবাদিকতায় আলো ছড়িয়েছেন এসএম ইকবাল   বরিশালের সেই মাদক সম্রাট রাসেল মেম্বর এবার ইয়াবার বড় চালানসহ গ্রেপ্তার   নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘বিরক্ত’ জেলেরা, তবুও ছাড়তে পারেন না পেশা   আওয়ামী লীগ দেশকে অনিবার্য সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে: চরমোনাই পির   এক সপ্তাহ পরেই শীতের আমেজের আভাস   আবার সরকারে এলে ফরিদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় করে দেবো: প্রধানমন্ত্রী   ১৯৭০ সালে জন্ম, ১৯৭৫ সালে এসএসসি পাস করেছেন ঝালকাঠির শিক্ষক মোবারক!   যাত্রী সংকটে বরিশাল বিমানবন্দরের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে   আজ সাংবাদিক এম.জাহিদ এর জন্মদিন   বরিশালে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম   বদলি হলেন ওসি, সঙ্গে নিলেন থানার সোফা, এসি, টেলিভিশন