বরিশালের মুলাদীতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত ও অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী। কোটা আন্দোলনের সহিংসতার জেরধরে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় এবং নেতাকর্মীদের নামে-বেনামে মামলা হওয়ায় চিহ্নিত নেতাকর্মী কেউই ঘরে থাকতে পারছেন না। অনেক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পালিয়ে থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন নারী সদস্যরা।
ইতোমধ্যে নতুন-পুরাতন মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৫ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। পুলিশ বাদী হয়ে একটি নাশকতা মামলাও করেছে। কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরুর পরে উপজেলায় কোনো কর্মসূচি পালন না করেও বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক শরীয়ত উল্লাহ।
কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তলাশি শুরু করে। এতে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম মৃধা বলেন, ২৭ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় মুলাদী থানা পুলিশ গাছুয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা বাজার থেকে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামাল হোসেন অপু মোল্লাকে আটক করে। তার নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ ২৭ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাজিরচর ইউনিয়নের খাসেরহাট এলাকায় একটি নাশকতার ঘটনা সাজিয়ে মামলা করে। ওই মামলায় অপু মোল্লাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠায়। ওই গায়েবি মামলায় পুলিশ বিএনপি ও ছাত্রদলের ১৪ নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ জন আসামি করেছে। ফলে উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৬ শতাধিক নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আব্দুল মালেক জানান, উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এরপরেও পুলিশ খুঁজে খুঁজে জামায়াতের লোকজনকে হয়রানি করছে। বাবাকে না পেয়ে ছেলেকে আটক করছে। থানায় নেওয়া এক ভাইকে দেখতে আরেক ভাই গেলে তাকেও আটকে রেখেছে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক শরীয়ত উলাহ বলেন, মুলাদী উপজেলায় কোটাবিরোধী কোনো মিছিল কিংবা কর্মসূচি পালন হয়নি। এরপরেও শ্রমিক দল নেতা আল আমিন রাড়ী, মো. সুমন হোসেন, পৌর যুবদল যুগ্ম আহবায়ক অপু মোল্লাসহ ৫ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া বলেন, সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পুলিশ কাউকে হয়রানি করছে না।
বরিশাল, বরিশাল বিভাগ