নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরগুনা সদর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করে ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাইন উদ্দিনের বিরুদ্ধে। রোববার ( ৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযুক্তের স্ত্রী সাজেদা বেগম সদর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত মাইন উদ্দিন (৫৪) সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের সিংড়াবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে মাইন উদ্দিন ও সাজেদা বেগম দম্পতির ঘরে আগুন লাগে। ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ থাকায় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। এর মধ্যে বসতঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সাজেদা ও মাইন উদ্দিনের। বিয়ের পরে অনেক বছর সুখে শান্তিতে বসবাস করেন তারা। কিন্তু কিছুদিন আগে তার কাছে যৌতুক দাবি করেন মাইন উদ্দিন। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় তাকে মারধর করেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৯টায় সাজেদাকে মারধর করেন মাইন উদ্দিন। ঘটনার সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে রক্ষা করেন। ঘটনার বিষয়ে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা আপস মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে নিকটতম আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাজেদা।
সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফারুক হাওলাদার বলেন, কিছুদিন ধরে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। একালাবাসী বিষয়টি সমাধান করতে চাইলেও কোনোভাবেই তারা মেনে নিতে পারছিল না। রোববার গভীর রাতে মাইন উদ্দিন স্ত্রীর ওপর অভিমান করে নিজ বসতঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় বলে শুনতে পেরেছি।
ভুক্তভোগী সাজেদা বেগম বলেন, বেশ কিছুদিন আগে থেকে যৌতুকের টাকার দাবিতে আমাকে মারধর করতো আমার স্বামী। গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) মারধরের শিকার হয়ে আমি আমার বোনের বাড়িতে চলে যাই।
ঠিক এর একদিন পর রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে আমার বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী মাইন উদ্দিন। আমি বাড়িতে না থাকার কারণে ঘরে থাকা সব মালামাল আসবাবপত্র, চাল-ডাল জরুরি কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে আমার প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল বিভাগ