ভেনিজুয়েলার পূর্বাঞ্চলীয় বলিভার রাজ্যের এল কালাও শহর। সোনার খনির কেন্দ্র। দেশটির সবচেয়ে বেশি সোনা উৎপন্ন হয় এখানেই। বৈধ নয়, অবৈধভাবেই চলে সোনা তোলার কাজ।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে কাজে যোগ দেয় শিশুরাও। ছোট বয়সে যেখানে খেলনা হাতে নেওয়ার কথা সেখানে খেলার মতোই শুরু করে এ কাজ। প্রতিবেশী দেশ গায়ানার বেসরকারি সনাতন বিশ্ববিদ্যালয় ইউসিএবি-এর মতে, এই অঞ্চলে প্রায় এক হাজার শিশু অবৈধ খনিতে কাজ করছে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটের ধাক্কা সইতে না পেরে স্কুল ছেড়ে যোগ দিচ্ছে সোনা তোলার কাজে। সোনার লোভেই স্কুল ছাড়ছে ভেনিজুয়েলার এসব সোনার ছেলেরা। অঞ্চলটিতে শিক্ষকের বেতন কমে যাওয়ার কারণে কিছু সরকারি স্কুলও বন্ধ হয়ে গেছে।
১০ বছর বয়সি মার্টিন (নাম পরিবর্তন করা হয়েছে) সোনার খনিতে কাজ করে। চাহিদা মেটাতে স্বেচ্ছায় স্কুল ছেড়ে বেছে নিয়েছে আয়ের পথ। মার্টিন জানায়, আমার বাবা বলেছেন কাজের মাধ্যমে অর্থ পাওয়া যায়। আমি এখানে যে অর্থ উপার্জন করি তা দিয়ে আমি আমার জিনিস যেমন জুতা, জামাকাপড় ও কখনো কখনো কিছু মিষ্টি কিনতে পারি।
মার্টিন আরও বলে, কিছু সোনা পারদের সঙ্গে আটকে থাকে। আকরিক থেকে সোনা বের করার জন্য তারা একটি বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে। ১১ বছর বয়সি আরেক তরুণ খনি শ্রমিক গুস্তাভো ৬ বছর বয়স থেকে খনন কাজ করছে। সেও কখনো স্কুলের মুখ দেখেনি।
দেশটির শিশু অধিকার এনজিও সেকোড্যাপের কর্মী কার্লোস ট্রাপানি এএফপিকে বলেন, এই সম্প্রদায়গুলোতে সোনা তোলার কাজ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিপদগুলোও স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তবে ট্রাপানি বিষয়টিকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হিসাবে বর্ণনা করলেও মার্টিন জানায়. সে স্কুলে যাওয়ার চেয়েও সোনা তোলার কাজকেই বেছে নিতে চায়।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)-এর ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, ছোট খনি শ্রমিকদের দ্বারা অর্জিত সোনার বেশিরভাগই শেষ পর্যন্ত সামরিক ও রাজনৈতিক অভিজাতদের হাতে চলে যায়।
ভেনিজুয়েলা ২০১৩ সাল থেকে একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জিডিপির ৮০ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং তেলের রিজার্ভের ওপর অত্যাধিক নির্ভরতাকে এর জন্য বিশেষভাবে দায়ী করেছেন।
আন্তর্জাতিক