বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় রাজশাহী মহানগরীতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও অপহরণকারী চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে আরএমপির শাহমখদুম থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের এসব সদস্যকে গ্রেফতার করেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জামিরুল ইসলাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানান। গ্রেফতারকৃত অপহরণ ও ছিনতাই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- আনফোর রহমান পাপ্পু (২১), এসএম সাজেদুর রহমান সৈকত (২০), মীর ওয়াসিউজ্জামান ওয়াসিম (২০), হাবিব (২৪), মাহফুজুর রহমান আলভী (২৪), মাসুদ রানা মিম (২৩), শিমুল (২২), সাব্বির হোসেন সুভাস (২৬), তন্ময় ইসলাম সজিব (২৭)।
আরএমপির মুখপাত্র এডিসি জামিরুল ইসলাম জানান, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ হাসান জুয়েল (২১) গত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মেসে ফিরছিলেন। এ সময় পথে পূর্ব পরিচিত পাপ্পু তাকে ফোন করে চা পানের জন্য শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম শেখপাড়ার একটি দোকানে ডাকেন। জুয়েল সেখানে গেলে দূরে কোথাও গিয়ে আরও কিছু খাওয়ার কথা বলে তাকে বলে। এক পর্যায়ে ওয়াসিমের মোটরসাইকেলে উঠিয়ে কিছু সময় ঘুরে পরে একটি অটোরিকশায় উঠেন তারা। একপর্যায়ে তারা বোয়ালিয়া থানার বালিয়াপুকুরের ভেতরের রাস্তার দিকে যেতে থাকলে জুয়েল আপত্তি করেন। এ সময় জুয়েলের বুকে চাকু ধরে তাকে জোর করে একটি আম বাগানের ভেতরে নিয়ে যায়।
এদিকে সেখানে তারা সবাই মিলে জুয়েলকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি, চড় থাপ্পড় মারে এবং গুরুতর জখম করে। এক সময় জুয়েলের কাছে থাকা ৬ হাজার টাকা, একটি হেডফোন, এতটি স্মার্ট ওয়াচ ও একটা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এছাড়াও জুয়েলকে ভয় দেখিয়ে তার বিকাশ নম্বরে থাকা ৬ হাজার ৪০০ টাকা সেন্ডমানি উত্তোলন করে নেয়। অপহরণ চক্রটি তার কাছে আরও ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। জুয়েল তার ভগিনীপতিতে অবগত করলে ৫ হাজার টাকা মোবাইলে বিকাশ করে পাঠান। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য জাহিদকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। কাউকে জানালে আবারো জুয়েলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় তারা। পরে জুয়েল এ বিষয়ে শাহমাখদুম থানায় অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে জাহিদ হাসান জুয়েলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহমাখদুম ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে পুলিশ অপহরণ ও ছিনতাই চক্রকে ধরতে অভিযান করেন। অভিযানে অপরাধী চক্রের ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া টাকা ও জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নগরীর শাহমাখদুম থানায় মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা সংঘবদ্ধ ছিনতাই ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্য। মাদক, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মারামারির ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত।
সারাদেশ