রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলে অনাবাসিক শিক্ষার্থী অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সম্প্রতি হলটির প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতদ্বারা শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সব আবাসিক শিক্ষার্থীকে জানানো যাচ্ছে, যেসব শিক্ষার্থী হল প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া নিজ কক্ষে অবস্থান না করে অন্য কক্ষে অবস্থান করছে, তাদেরকে নিজ নামে বরাদ্দকৃত কক্ষে অবস্থান করতে বলা হচ্ছে এবং হলে কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী অবস্থান করতে পারবে না। সেইসঙ্গে যাদের পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে তাদের নিয়মানুযায়ী অফিসে সিটসমূহ বুঝিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। অন্যথায় যে কোনো সময় হলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে হল প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে সব আবাসিক শিক্ষার্থীর সহযোগিতা কামনা করছি।
এদিকে দীর্ঘদিন যাবত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বেশিরভাগ আসন ক্ষমতাসীনদের দখলে থাকার পর জিয়া হল প্রাধ্যক্ষের এমন সাহসী উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শুধু একটি হলেই নয়, প্রতিটি হলে একযোগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে সীমাবদ্ধ না থেকে অবৈধ এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হল প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, একজন শিক্ষার্থী হলে বৈধভাবে তোলার দায়িত্ব হল প্রশাসনের। কিন্তু সেই হল প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে অথবা তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ক্ষমতাসীন দল অনেকগুলো আসন দখল করে রেখেছে। এর আগে সোহরাওয়ার্দী হলে সিট দখলমুক্ত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। বিষয়টি সব জায়গায় প্রশংসিত হয়েছিল। সে হিসেবে জিয়া হল প্রশাসন যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, এই উদ্যোগটি ভালো। তিনি সাহস করে এই বিজ্ঞপ্তিটি দিয়েছেন। তিনি যদি সত্যিকার অর্থে এটি কার্যকর করতে পারেন তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনের পাশে থাকবেন। বিজ্ঞপ্তিতে সীমাবদ্ধ না থেকে যদি তিনি বৈধ প্রক্রিয়ার কিছু শিক্ষার্থীকে হলে তুলে দিতে পারেন, তাহলে আমরা তাকে আরও সাধুবাদ জানাব। প্রত্যেক হলেই এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
হল প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন বলেন, অনেকের পড়াশোনা শেষ হওয়া সত্ত্বেও সিটে রয়েছে। আবার বৈধতা না নিয়েও কিছু শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করছে। ফলে হলে নতুন আবাসিকতা পাওয়া শিক্ষার্থীরা উঠতে পারছে না। এজন্যই অবৈধদের সিট ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের হলগুলোর আসন সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ৪০ শতাংশেরও কম। এসব সিটগুলো জরুরি শুধুমাত্র নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক যারা ইতোমধ্যে হলে তাদের সিটের নির্দিষ্ট সময়সীমা অতিক্রম করেছে তাদের উচিত সিটগুলো ছেড়ে দেওয়া। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষরা পদক্ষেপ নিলে, আমি বলব শিক্ষার্থীসহ সবাইকে সহযোগিতা করতে।
শিক্ষা