‘আব্বু ঘুমাইয়া রইছে; এখনো উঠে না। কথাও কয় না। আব্বু না উঠলে আমাগো ভার্সিটির টাকা কে দিবে? আমি কারে আব্বু কইয়া ডাক দিমু। কেডা আমারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লইয়া যাইবে।’
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীর শিকদারের মেয়ে তনিমা আক্তার আহাজারি করে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বাবার মৃতদেহের পাশে বসে। বড় বোন মিতু বাবার শোকে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রয়েছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ওয়াপদা (পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ) সড়কে মোটরসাইকেলচাপায় নিহত হয়েছেন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী গ্রামের মৃত আনোয়ার আলী শিকদারের ছেলে।
এ ঘটনায় মোটরসাইকেলচালক মো. হোসেনের বিরুদ্ধে গলাচিপা থানায় মামলা হয়েছে।
নিহতের পরিবার জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় জানাজা শেষে নিহতের নিজ বাড়ি রাঙ্গাবালীর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহতের ভাই মামুন শিকদার জানান, গলাচিপা উপজেলায় জাহাঙ্গীরের হার্ডওয়ার ও ফার্মেসি দোকান রয়েছে। ঘটনার দিন দোকান বন্ধ করে বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় বেড়িবাঁধের উপরে মোটরসাইকেল চাপায় আহত হন। পরে গলাচিপা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম জাহাঙ্গীরকে হারিয়ে দুই মেয়ে ও স্ত্রী এখন পাগল প্রায়।
মামুন আরও বলেন, জাহাঙ্গীর কেবল সুখের পরশ পেয়েছে। বড় মেয়ে মিতু (২৭) বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। সদ্য বিয়ে হয়েছে তার। আর ছোট মেয়ে তনিমা (২৩) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে অধ্যয়নরত।
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন মোবাইল ফোনে বলেন, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বরিশাল বিভাগ