খেলাপি ঋণ কমানোসহ ৬টি সংস্কার কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ)। অন্যগুলো হচ্ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমানো, শুল্ক এবং ভ্যাট বিভাগে কমপ্লায়েন্স ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট গঠন এবং জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় ফর্মুলা কার্যকর। এছাড়া ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জিডিপির হিসাব প্রকাশ ও নিট রিজার্ভ হিসাব প্রকাশ।
বুধবার ঢাকায় শুরু হওয়া আইএমএফ মিশনের প্রথম দিনের বৈঠকে তারা এসব কর্মসূচির অগ্রগতি জানতে চাইবেন অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ মিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে। তাদের দেওয়া কর্মসূচির অগ্রগতি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করছি ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে ন্যূনতম আন্তর্জাতিক নিট রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে আইএমএফ মিশনের কাছে। এছাড়া গত অর্থবছর এবং চলতি অর্থবছরের প্রথম দুমাস (জুলাই-আগস্ট) কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আয় না হওয়ার ব্যাখ্যাও দেওয়া হবে। আর জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় ফর্মুলা আগামী জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন করারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির সূচকগুলো জানতে চাইবে। তবে মিশন এমন সময় সফর করছে যখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও রিজার্ভে এক ধরনের বিরূপ প্রভাব বিরাজ করছে। বেড়েছে খেলাপি ঋণের হারও। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪.৩১ বিলিয়ন ডলার, যা গত পাঁচ মাসে সর্বনিম্ন। সেপ্টেম্বরে ১.৩৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত তিন মাসে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। এসব বিষয়ে আইএমএফ আগে থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল।
এই মুহূর্তে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলারে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী এর অঙ্ক ২ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার। তবে ঋণের জন্য শর্ত অনুযায়ী নিট রিজার্ভের লক্ষ্যে পৌঁছতে আরও ৩ দশমিক ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন।
সূত্র মতে, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করার আগে তাদের দেওয়া শর্ত ও সংস্কার কর্মসূচি পর্যালোচনায় এ বৈঠক করা হবে। এ পর্যালোচনা করতে ইতোমধ্যে আইএমএফের প্রতিনিধিদল ঢাকায় অবস্থান করছে। আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত এ পর্যালোচনা চলবে। এ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ আইএমএফের মিশনপ্রধান রাহুল আনন্দ।
জাতীয়