নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের বানারীপাড়াতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী (৪০) ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে সাড়ে সাত মাসের মৃত সন্তান প্রসব করার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ওয়ার্ডের মাহাবুব খলিফার ছেলে স্থানীয় দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র আলী হোসাইন খলিফার (১৬) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার ওই নারীর বাবা মজনু শেখ বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন।
ভিকটিমের বাবা মজনু শেখ জানান, ২০ বছর পূর্বে তার মেয়েকে খুলনায় মোবারক নামের এক জনের সঙ্গে বিবাহ দিয়েছিলেন। সেই সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়। দাম্পত্য কলজের জের ধরে বিয়ের ৫/৬ বছর পরে তার মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং সন্তানদের মায়ের কাছ থেকে তার পিতা রেখে দেয়। সেই থেকে পিত্রালয়ে আশ্রয় নেওয়া ওই নারী একদিকে সংসার হারানো অন্যদিকে সন্তানদের কাছে রাখতে না পারার কষ্ট-যন্ত্রনায় ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেন।
তিনি আরও জানান, কাজের সন্ধানে তাকে প্রায়ই বাড়ির বাহিরে থাকতে হয়। তখন প্রতিবন্ধী স্ত্রী ও মেয়ে বাসায় থাকতো। এই সুযোগে গত ৮ থেকে ৯ মাসের মধ্যে অভিযুক্ত প্রতিবেশী আলী হোসাইন তার মেয়েকে কয়েকবার জোর পূর্বক ধর্ষণ করে । একদিন রাতে বাসায় ফিরে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় হোসাইনকে হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়।
অভিযুক্ত হোসাইনের বাবা-মাকে জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এদিকে কিছুদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ের শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হলে অভিযুক্ত হোসাইনের বাবা মাহাবুব খলিফাকে জানান মজনু শেখ। গত ৭ অক্টোবর ভুক্তভোগীর আলট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায় সে ৭ মাস ১৫ দিনের অন্তঃসত্ত্বা।
১০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালের দিকে প্রসূতি ওই নারীর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব হলে তাকে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। এর কিছু সময় পরে একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত হোসাইন খলিফা গা ঢাকা দেন। মুঠোফোনে ছেলেকে নির্দোষ দাবী করে তার বাবা বলেন, তার ছেলে হোসাইন আগামী বছর দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে তার বয়স ১৬ বছর ৩ মাস । অথচ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ১৯ বছর।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, মামলা নিয়ে মৃত নবজাতককে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ডিএনএ টেষ্ট ও পোস্টমর্টেম জন্য পাঠানো হয়। সেখানে তার ময়না তদন্ত ও ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রসূতি কিছুটা সুস্থ হলে তার ও গ্রেফতারের পরে আসামীর ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হবে। আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল