তীব্র সংকটের মধ্যেও ডলারের দাম আরও ২৫ পয়সা কমানো হয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডলারের নতুন দর আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে।
বুধবার রাত ১০টায় অনলাইনে সংগঠন দুটির এক যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাফেদার সভাপতি ও সোনালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় দুই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ফলে এখন থেকে প্রতি ডলার ব্যাংকগুলো ক্রয় করবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে, যা আগে ক্রয় করত ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা দরে। একই সঙ্গে প্রতি ডলার বিক্রি করবে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা করে, যা আগে ছিল ১১০ টাকা ২৫ পয়সা।
এবার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন দফায় ডলারের দাম ১ টাকা কমানো হলো। এর আগে গত ২৩ নভেম্বর প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা ও ২৯ নভেম্বর প্রতি ডলারে ২৫ পয়সা কমানো হয়েছিল।
নতুন সিন্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী রোববার থেকে ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স রপ্তানি আয়ের ডলার কিনবে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে। অন্যান্য খাতে আসা ডলারও ব্যাংকগুলো কিনবে একই দরে। আমদানি দায় পরিশোধ, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধসহ সব খাতেই ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করবে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা করে। এ ছাড়া শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য খাতেও একই দামে ডলার বিক্রি করবে। তবে নগদ ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। ব্যাংকগুলো নিজস্ব দরে নগদ ডলার বেচাকেনা করবে। বর্তমানে নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা দরে। এর আগে নগদ ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তবে ব্যাংকগুলো ডলারের দাম কমালেও বাস্তবে এই দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগই ডলার কিনছে এর চেয়ে বেশি দামে। যেমন রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সরকার প্রতি ডলারে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোও নিজস্ব তহবিল থেকে আরও সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে। এ হিসাবে বর্তমানে প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা ৪৮ পয়সা। ২৫ পয়সা দাম কমানোর ফলে ৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ প্রতি ডলারের দাম পড়বে ১১৪ টাকা ৯৮ পয়সা। আগের চেয়ে প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা কম পাবেন প্রবাসীরা।
ডলারের দাম কমানো হলে নির্ধারিত দামে কেনাবেচা হচ্ছে একেবারেই কম। বুধবার ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স কিনেছে সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার বেশি দামে। এসব ডলার তারা আমদানিতে বিক্রি করেছে ১২৪ টাকা করে।
বাফেদা ও এবিবি মনে করে, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি কমে গিয়ে এখন উদ্বৃত্ত হয়েছে। আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের ফলে রিজার্ভ আরও বাড়বে। এতে ডলারের প্রবাহও বাড়বে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি সংস্থা থেকে অচিরেই ঋণ পাওয়া যাবে। সব মিলে ডিসেম্বরের মধ্যেই পাওয়া যাবে ১৩১ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক