চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ অস্ত্র আসছে। এর কিছু ধরা পড়লেও বড় অংশ হাতবদল হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। বুধবার রাতে সীমান্তের চকপাড়া এলাকায় চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া একটি বস্তা থেকে ৬টি বিদেশি পিস্তল, ১২টি ম্যাগাজিন, ২৩৬ রাউন্ড পিস্তলের গুলি এবং ৫১ রাউন্ড মেশিনগানের গুলি উদ্ধার করে বিজিপি।
এ যাবৎকালে ৫৯ বিজিবির এটাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র উদ্ধার। এর আগে ১৫ নভেম্বর সীমান্ত পেরিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দেশে প্রবেশের সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বিজিবি-৫৯। ওই চালানে ছিল একটি বিদেশি পিস্তল, ৩৬ রাউন্ড গুলির দুটি ম্যাগাজিন। মাহবুব নামের ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজিবি জানায়, গ্রেফতার হওয়ারা জানিয়েছেন, তারা ওপার থেকে অস্ত্র এনে এপারের অস্ত্র কারবারিদের হাতে তুলে দেয়। আর ওই অস্ত্র বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য অস্ত্রের চালান আনা হচ্ছে। জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি এবং নাশকতার কাজেও এসব অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়েই প্রধানত ভারত থেকে অবৈধ অস্ত্র আসে। পদ্মার চরে একাধিক ইউনিয়ন আছে। তার বিপরীতেই ভারত। এই এলাকা দিয়ে ভারত থেকে দেশে অস্ত্র আসা সহজ। দেশটির বিহার রাজ্যের পাটনা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের শহর মুঙ্গেরে। এর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।
বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসছে। এজন্য বিজিবি সদর দপ্তর থেকে সীমান্তে কড়া নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ পাওয়ার পর নিয়মিত টহল টিমের বাইরে অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ টিম প্রস্তুত রয়েছে প্রতিটি বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট বা বিওপিতে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়মিত চৌকি বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান বলেন, অস্ত্র গোলাবারুদ, বিস্ফোরক চোরাচালানের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বিশেষ টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। এতগুলো অস্ত্র একসঙ্গে উদ্ধার স্বাভাবিক বিষয় নয়। আমাদের কাছে খবর ছিল, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে একটি বিশেষ মহল অস্ত্রের চালান আনছিল। আমরা তাদের ধরতে সক্ষম হয়েছি।
সারাদেশ