অনলাইন ডেস্ক ::: ভাঙা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথ নিয়ে অপেক্ষা বাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের সাত জেলায়। বরিশালে ৫ বছরেও শেষ হয়নি জমি অধিগ্রহণ। এতে এ অঞ্চলের অর্থনীতির বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা বিলম্বিত হচ্ছে। পাশাপাশি পায়রা বন্দরকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার উদ্যোগও থমকে আছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
দক্ষিণাঞ্চলের সাত জেলায় আক্ষেপ
বরিশাল নগরীর টিয়াখালী, দক্ষিণ সাগরদীসহ বেশ কিছু এলাকায় রেললাইন স্থাপনে জমি অধিগ্রহণ হবে- এমন তথ্য জানিয়ে সেখানকার বাড়িঘরে লাল রঙ দিয়ে নম্বর ও জমিতে খুঁটি দিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। নকশানুযায়ী এসব স্থাপনা, জমিতে কোনো কিছুর পরিবর্তনেও নিষেধ করা হয়। এমন কার্যক্রমের ৫ বছর কেটে গেলেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
আক্ষেপ করে স্থানীয়রা জানান, অধিগ্রহণ বিষয়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় নতুন ঘর নির্মাণ করা যাচ্ছে না। জমি বিক্রিও করা হচ্ছে। ঘর মেরামতের সমস্যা হচ্ছে। এখন আমরা জমি বেঁচতেও পারি না। রাখাটাও বিপদ। যদি আমাদের জমি অধিগ্রহণ করে তাহলে করুক; নইলে ছেড়ে দিক আমরা কাজবাজ করি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন প্রস্তুত। অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক রেল চলাচলের। এগিয়ে চলছে ভাঙ্গা-যশোর রেললাইনের কাজও। কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরকেও রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কথা জানানো হয় রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। ২০১৯ সালে ওই ঘোষণার পর শুরু হয় নানা তৎপরতা।
ভাঙা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথে স্টেশন থাকবে ১৯টি। সেগুলোর ভবন হবে ইলিশের আদলে। ২০৩০ সালের মধ্যে রেল পথটি চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মূল প্রকল্পের কাজ
ফরিদপুরের ভাঙা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত ২০৫ কিলোমিটারের রেললাইন রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে সাত জেলাকে। এ প্রকল্পে খরচ ধরা হয় ৪৪ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ২০৫ কিলোমিটার রেলপথের ১৭ কিলোমিটার নিচু জমিতে হবে উড়াল রেললাইন। ১০টি নদীর ওপর নির্মিত হবে ৪৬টি রেলসেতু; থাকবে ৪৪০টি বক্স কালভার্ড। লেভেল ক্রসিংয়ের বদলে ব্যবহার হবে আধুনিক কালভার্ড।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সঙ্গে আর্থসামাজিক পরিবর্তন
ঢাকার সঙ্গে বরিশাল অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগকে সহজ করেছে পদ্মাসেতু; আছে নৌপথ, আকাশপথও। এতোদিন ছিলো না রেল যোগাযোগ। তাই ভাঙা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথ এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সঙ্গে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে আর্থসামাজিক অবস্থাতেও।
বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক পান্না লাল রায় বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রফতানি দ্রব্যগুলো পায়রা বন্দরে আসতে পারবে। এর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরুর আশ্বাস
অর্থ বরাদ্দ পেলেই পুরোদমে শুরু হবে কাজ এমন আশার কথা জানান ভাঙা-বরিশাল-কুয়াকাটা রেললাইন সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মামুনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি কোম্পানি এসেছিল। তারা কাগজপত্র দেখেছে; ফান্ড করবে বলে জানিয়েছে। আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও খোঁজ করছে। ফান্ড পেলে অবশ্যই কাজ শুরু হবে।
অনলাইন ডেস্ক, জাতীয়, বরিশাল বিভাগ