নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ৭৬ বছরের বৃদ্ধ মোঃ হাতেম গাজীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পুত্র মনসুর গাজী। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৭ টায় উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের চরআউলিয়াপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল (৫ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫ টায় তিনি মারা যান।
মৃত হাতেম গাজী বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১০ নং গারুড়িয়া ইউনিয়নের মৃত এলেম গাজীর ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন- মৃত ফকরুদ্দিন হাওলাদারেরে পুত্র ফোরকান হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার, লিটন হাওলাদার, শিপন হাওলাদার, হারুন হাওলাদার, আশ্রাব মৃধা ও তার ছেলে শুভ মৃধাসহ ১৫ জন।
মনসুর গাজী অভিযোগ করে জানান- মনসুর গাজীর সাথে অভিযুক্তদের দীর্ঘদিন যাবৎ জমি-জমা নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ জুন অভিযুক্ত ফোরকান হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার, লিটন হাওলাদার, শিপন হাওলাদার, হারুন হাওলাদার, আশ্রাব মৃধা ও তার ছেলে শুভ মৃধাসহ ১৪/১৫ জন একত্রিত হয়ে মুনসুর গাজীর উপড় হেলেঞ্চা ব্রীজের ঢালে প্রকাশ্যে হামলার চেষ্টা করে। এরপরের দিন সকালে ফোরকান হাওলাদর, আশ্রাব মৃধাসহ কতিপয় লেঅকজন মনসুর গাজীর ছোট ভাই জামাল গাজীর বসতঘরে ঢুকে তার ছেলে, মুনসুর গাজী এবং তার স্ত্রীর উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ওই হামলার ঘটনায় মামলা করলে ফোরকান হাওলাদার, লিটন হাওলাদার, হারুন হাওলাদার ও আশ্রাব মৃধা গ্রেপ্তার হন। তারা পরের দিন জামিনে এসেই পুনরায় মনসুর গাজীর পরিবারকে হত্যার হুমকি-ধামকী দিতে করতে থাকেন। এ ঘটনার জের ধরে গত ৪ জুলাই মনসুর গাজীর বাবা হাতেম গাজী ১৮৪ নং সি আর মামলায় বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষি দিয়ে বাড়ি ফিরলে অভিয্ক্তরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুনরায় মনসুর গাজীর পরিবারের উপর হামলা করার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়ে ফোরকান হাওলাদারের ঘরে অবস্থান করে। এমন সময় হাতেম গাজী সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বাড়িতে ফিরে ঘরে অবস্থান করছিলেন। এদিকে অভিয্ক্তরা তাদের উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করছিলেন। তখন তিনি গালমন্দ করতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ফোরকান হাওলাদার, তার ছেলে ফয়সাল হাওলাদার, ফোরকানের ভাই লিটন হাওলাদার, ফারুক হাওলাদার, ফোরকানের স্ত্রী মাহিনুর বেগম, আশ্রাব মৃধা ও তার ছেলে শুভ মৃধা হাতেম গাজীর দিকে তেরে আসেন। এ সময় হাতেম গাজী ‘আমাকে মারবি, আমাকে মারবি’ এমনটা বলতে থাকেন। তখন ফোরকান হাওলাদার ‘তোরে মারলে কি হবে’ এই বলে তেরে এসে হাতেম গাজীর মাথা ধরে তার কাঠের ঘরের চৌকাঠের সাথে ধাক্কা মেরে ছেড়ে দেন। এই অবস্থা দেখে মুনসুর গাজী দৌঁড়ে আসলে তার উপরও হামলা করে কিল, ঘুসি, লাথি মারতে থাকেন অভিযুক্তরা। তা দেখে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে এবং হাতেম গাজীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরবর্তীতে হাতেম গাজীকে উঠিয়ে বসালে তিনি বমি করতে থাকেন। এরপর তাকে খাটের উপর নিয়ে শোয়ালে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর আশপাশের লোকজন এবং আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় হাতেম গাজীকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে প্রেরন করেন। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ৫ জুলাই ভোর সাড়ে ৫ টায় তিনি মারা যান।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা জানান, নিহত হাতেম গাজীর পুত্র মনসুর গাজী থানায় আসছিলেন মৌখিক অভিযোগ করেছেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন অনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল, বরিশাল বিভাগ