নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় চরাদী ইউনিয়নের ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আনিসুর রহমান। প্রধান শিক্ষকের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি প্রার্থীসোহাগ হাওলাদার। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, চরাদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন বিভিন্ন সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম চুন্নুসহ তার ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা চরাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম।
এছাড়াও এই বিদ্যালয়ের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি ছিলেন চরাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মল্লিক। মূলত আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে প্রধান শিক্ষকের পছন্দের প্রার্থীরে সব সময় ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক গত বছর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেশের বাহিরে অবস্থান করার সুযোগে ১৪ ও ১৫ মে বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মেহগনি ও রেইনট্রি গাছ স্থানীয় নাসির ব্যাপারি নামের এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন। যাহা আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটের ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে করোনা কালীন সময়ের ২০২১ সালের বিদ্যালয়ের ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ থেকে মোট অংকের টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। যাহা সোহাগ হাওলাদারের মাধ্যমে উন্মোচন হলে প্রধান শিক্ষক তার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের পরপরই ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয় এডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয়রা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও চরাদী ইউনিয়নের বিএনপির বর্তমান কমিটির ১ যুগ্ন আহ্বায়ক সোহাগ হাওলাদারকে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রস্তাব পাঠালে প্রধান শিক্ষক কুট কৌশলে সোহাগ হাওলাদার অযোগ্য প্রার্থী বানাতে নীল নকশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। প্রধান শিক্ষক আনিসুল রহমান নিজের পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতি মনোনীত করতে সোহাগ হাওলাদারের বিরুদ্ধে নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে গত (৭ জানুয়ারি ) সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয় মাঠে ভাড়াটে কিছু বখাটে লোকজন দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে সোহাগ হাওলাদারের বিরুদ্ধে একটি ভিক্ষোব মিছিল দেয় যেখানে কোন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল না। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা যখন মাঠে খেলতেছিল বহিরাগত বকাটে লোকজন দিয়ে তাদেরকে ডেকে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করার চেষ্টা করে।
যাহা পরবর্তীতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রধান শিক্ষক সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের দোসরা প্রভাবশালী মহল নিয়ে গঠনতন্ত্র উপেক্ষা ও আইন লঙ্ঘন করে তাদের পছন্দের লোকজন দ্বারা একটি পকেট কমিটি গঠন করার পায়তারা চালাচ্ছে প্রধান শিক্ষক।
এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোহাগ হাওলাদারের বিরুদ্ধে যারা ভিক্ষোব মিছিল করেছে তারা কেউ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। এ সময় তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এনিয়ে এলাকাবাসী শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে পকেট কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করে যোগ্য প্রার্থীকে সভাপতি নির্বাচিত করার দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয় এর অভিভাবক সদস্য সহ স্থানীয়রা।ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য স্থানীয় ফারুক হোসেন বলেন আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে আমরা কমিটির সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছি স্থানীয় লোকজন মিলে আমাদের এলাকার ছেলে এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোহাগ হাওলাদার কে কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব দিয়েছি। কারণ সোহাগ হাওলাদার বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যে কোন অনুষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতা সব সময় স্কুলের খোঁজখবর রাখেন ও বিভিন্ন অবকাঠামোসহ অনুদান দিয়ে আসছে যাহা এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসনীয়। তাই আমরা স্থানীয়রা ও প্রধান শিক্ষক কে নিয়ে আলোচনা করে সোহাগ হাোলাদারকে এই স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব দেই।
কিছুদিন পরে ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান এলাকার কিছু কুচকি মহলের নির্দেশে ও তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সোহাগ হাওলাদার কে তিন নাম্বারে রেখে বরিশাল ডিসি অফিসে একটি নামের তালিকা পাঠিয়ে দেন এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় সাধারণ জনগণ ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই বিষয়ে এডহক কমিটির সভাপতি প্রার্থী সোগাহ হাওলাদর জানান, সাংবাদিক ভাইদের ভুল তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে একটি কুচক্রী মহল। ফজলুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের সব সময় পাশে ছিলাম। আমি সব সময় বিদ্যালয়ের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।
বরিশাল, বরিশাল বিভাগ