নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইতে সাংবাদিক খন্দকার রাকিব ও তার ছোট ভাই খন্দকার শরীফুল ইসলামের উপর সশস্ত্র হামলা, দোকানপাট ভাঙচুর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিক খন্দকার রাকিব।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে চরমোনাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ পশুরীকাঠী গ্রামের চাঁদেরহাট বাজারে শরীফুলের স্টেশনারী ও পোল্ট্রি দোকানে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরীকাঠী গ্রামের ইউনুস আলী হাওলাদারের ছেলে মোঃ মাঈনুল হাওলাদার (৪৫), মোঃ মামুন হাওলাদার (৫৫), গিলাতলী গ্রামের মোঃ কাঞ্চন আলীর ছেলে মোঃ আকবর (৩৫), মোঃ মাইনুল হাওলাদারের ছেলে মোঃ মায়াজ হাওলাদার (১৯), গিলাতলীর মোঃ জামালের ছেলে মোঃ নয়ন (২২), একই গ্রামের সুনান (১৯) সহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- চরমোনাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্থ পশুরীকাঠী গ্রামের চাঁদেরহাট বাজারে শরীফুলের স্টেশনারী ও পোল্ট্রি দোকান রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে শরীফুলের দোকানের সামনে একটি অটোর সাথে ট্রলির ধাক্কা লাগে। ওই অটোতে দুজন স্কুলছাত্রী ছিল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজন ট্রলির ড্রাইভারকে মারধর করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকজন স্কুলছাত্র পুনরায় ওই ট্রলির ড্রাইভারকে মারধর করে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শরীফুলের কাছে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি দুর্ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় লোকজনদের কাছে সত্য বলেন। এতে অভিযুক্তরা শরীফুলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোঃ মাঈনুল হাওলাদার ও মোঃ মামুন হাওলাদারের নেতৃত্বে মোঃ আকবর, মোঃ মায়াজ হাওলাদার, মোঃ নয়ন, সুনানসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, রামদা, লোহার রড, লাঠি সোটাসহ শরীফুলের দোকানের মধ্যে ঢুকে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এ সময় শরীফুলের বড় ভাই খন্দকার রাকিব তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা শরীফুল ও তার বড় ভাইকে এলোপাথারী মারধর করে।
এ সময় মাঈনুল হাওলাদারের হাতে থাকা চাপাতি ও তার ছেলে মায়াজের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দেখিয়ে তাদের দুই ভাইকে খুন জখমের হুমকি দিতে থাকে। তখন শরীফুলের দোকানে থাকা ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়া যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর শরীফুল ও তার বড় ভাই বরিশাল
শহরে আসার জন্য দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আবারও তারা পথরোধ করে এলোপাথারী মারধর করে এই ঘটনায় মামলা-মোকদ্দমা করলে শরীফুল, তার বড় ভাই ও বাবাকেসহ পরিবারের সকলকে ভবিষ্যতে খুন জখমের হুমকি প্রদান করে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা শরীফুলকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযোগ রয়েছে- আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মাঈনুল হাওলাদার নিজেকে মস্তবড় শ্রমিক দল নেতা দাবি করে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তবে তার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। অপরদিকে তার ভাই মামুন হাওলাদার বিগত দিনে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। পাশাপাশি চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়কের পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন। তবে তিনি বিএনপির কোন কর্মসূচীতে যোগদান করেন নি।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন- ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন- এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ আমি দেখেছি। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
লিড নিউজ বরিশাল, বরিশাল বিভাগ