অজামিনযোগ্য চারটি ধারা রেখেই সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদনঅজামিনযোগ্য চারটি ধারা রেখে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকারের মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ধারা চারটি হচ্ছে-গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ, কম্পিউটটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ক্ষতি, সাইবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ।বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সচিবালয়ে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০২৩’-এর খসড়ায় সংজ্ঞাসহ সামান্য কিছু পরিবর্তন করে সেটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩ ধারা অজামিনযোগ্য রয়েছে। বাকিগুলো জামিনযোগ্য। তিনি জানান, ১৭ ধারায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ, ১৯ ধারায় কম্পিউটটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ক্ষতি, ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং ৩৩ ধারায় হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা আছে।বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রোহিত করে একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে সরকার। ৭ অগাস্ট এই আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। তবে নতুন আইনেও উদ্বেগ জানিয়ে আসছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো ও অধিকারকর্মীরা। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে অংশীজন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ ছিল, আইনে সাজা কিছু কমানো ও ধারা জামিনযোগ্য করা ছাড়া বিষয়বস্তুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এতে মানুষের হয়রানি কমবে না।৯ আগস্ট আইনটির খসড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনদের মতামত চাওয়া হয়। এ জন্য তারা ১৪ দিন সময় দিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০০ মতামত জমা পড়ে। জানা গেছে, যে দুটি ধারা নতুন করে জামিনযোগ্য করা হয়েছে, তার একটি ২১ নম্বর ধারা। ২১ নম্বর ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা প্রভৃতি অবমাননার সাজার কথা বলা হয়েছে।নতুন আইন কার্যকর হলে আগের আইনের মামলাগুলোর বিষয়ে কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের রহিতকরণ একটা ধারা থাকে।
সেখানে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর অধীনে অনিষ্পন্ন মামলা সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে এবং অনুরূপ মামলায় প্রদত্ত আদেশ, রায় বা শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল সংশ্লিষ্ট আপিল ট্রাইব্যুনালে এমনভাবে পরিচালিত ও নিষ্পত্তি হবে যেন ওই আইন রহিত হয়নি। ওই অংশটুকু আগের আইনেই চলবে, সেটিই বলা হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত আগের আইনের যেসব কার্যক্রম ছিল ওই আইনে সেগুলো নিষ্পন্ন হবে। সংজ্ঞার বিষয়ে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে বা ভেতর থেকে কেউ যখন কোনো কিছু করে, কোন কাজটা করলে অপরাধ হবে সেখানে ‘ডিজিটাল ডিভাইস’ শব্দটা বসানো হয়েছে। একটা ধারায় ছিল ‘জাতির পিতা’ সেটা বাদ দিয়ে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ করা হয়েছে। তবে নতুন আইনে জরিমানার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি বলে জানান মাহবুব হোসেন।
সংরক্ষিত নারী আসনের উপনির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে: ‘জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন (সংশোধন) আইন ২০২৩’-এর চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানতের পরিমাণ ১০ হাজারের জায়গায় করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা এবং উপনির্বাচন ৪৫ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনে অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৪ সালের আইনে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ছিল ৪৫টি। পরে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী সদস্যদের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ করা হলেও আইনে তার সংশোধনী আনা হয়নি। এখন এই বিষয়টি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নিষ্পন্ন জাতীয়