নিজস্ব প্রতিনিধি:: অপমৃত্যু মামলায় ওয়ারেন্ট বের করার ভয় দেখিয়ে ঝালকাঠিতে নলছিটিতে দুই ব্যক্তির কাছে মোবাইল ফোনে টাকা দাবি করেছে এক প্রতারক। এসময় নিজেকে নলছিটি থানার এসআই হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে খোদ পুলিশের কাছেই টাকা দাবি করেছেন আরেক প্রতারক। সিআইডি প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক হিসেবে পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করেন ওই প্রতারক। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটা এই দুই ঘটনায় উপজেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের মেরহার গ্রামের বাসিন্দা সোহেল খান জানান, গত ২০ আগস্ট আমার ভাইয়ের মেয়ে মানসুরা আক্তার (৯) পানিতে ডুবে মারা যায়। কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় থানায় কোন অপমৃত্যু (ইউডি) মামলাও হয়নি। কিন্তু নলছিটি থানার এসআই মাইনুল পরিচয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে বাংলালিংক কোম্পানির একটি মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন করেন এক ব্যক্তি। ফোনে তিনি বলেন, ‘আপনি থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। সেটা নিষ্পত্তি করতে হবে। আমি আদালতে আছি এখনই ২৩০০ টাকা বিকাশে পাঠান। না হলে ওয়ারেন্ট বের করে আপনাকে ধরা হবে।’
মানসুরা পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনায় আমরা কোন মামলা করিনি জানালে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘হাসপাতালে যে স্বাক্ষর দিয়েছেন সেই স্বাক্ষর নিয়েই অপমৃত্যুর মামলা এজাহার করেছি। আপনি মামলার বাদি। মামলা নিষ্পত্তিতে ২৩০০-২৪০০ টাকা খরচ। এটা কি আমি দিবো? বিকেলে থানায় আপনার ভাই মিন্টু খানকে পাঠিয়ে ৯টি কাগজ নিয়ে যাবেন। কাগজে আমার স্বাক্ষর, ওসি সাহেবের স্বাক্ষর, ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের লাল কালির দাগ ও ওনার সিল-স্বাক্ষর থাকবে। খরচটা আমার দেয়া লাগবো। টাকা লাগবে এখন। এরকিছু সময় পর ওই ব্যক্তি আমার ভাই মিন্টু খানকেও টাকার জন্য দুইবার ফোন করেন।
নলছিটি থানার এসআই এনামুল জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে বাংলালিংক কোম্পানির একটি মোবাইল নম্বর থেকে আমার মোবাইল নম্বরে ফোন আসে। অপরপ্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে সিআইডির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দিলীপ কুমার সাহা হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য কেমিক্যাল লাগবে। টাকা পাঠানোর পর কেমিক্যাল আনা হবে।’ এর কিছু সময় পর ওনার পিওন পরিচয় দিয়ে আরেকজন একই কথা বলেন।
এসআই মাইনুল বলেন, প্রতারক চক্র আমার নাম ব্যবহার করে একাধিক ব্যক্তির কাছে টাকা দাবি করেছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঝালকাঠী