মুলাদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারে মেতে উঠেছেন জেলেরা। পেশাদার জেলেদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মৌসুমি জেলেরা। উপজেলার আড়িয়াল খাঁ ও জয়ন্তী নদীতে ইলিশ শিকার করছেন তারা।
গত ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিদিনই জেলেরা নদীতে ইলিশ শিকার করছেন। হাট-বাজারে ইলিশ বিক্রি করতে না পেরে তারা রাতের আঁধারে বসিয়েছেন হাট। ভ্রাম্যমাণ এসব হাটে ইলিশ বেচা-কেনার উৎসব করছেন জেলে ও ক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার জয়ন্তী নদীর তীরবর্তী চরকালেখান ইউনিয়নের ভেদুরিয়া, ষোলঘর, বেপারীরহাট এবং সীমান্তবর্তী আবুপুর এলাকায় রাতের ইলিশের হাট বেশি দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এসব হাটে ইলিশ বেচাকেনা চলে। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে জেলেরা ইলিশ শিকার করে রাতের আঁধারে টর্চের আলো জ্বেলে বিক্রি করছেন।
অভিযান চালিয়ে জেলেদের জেল-জরিমান দিয়েও ইলিশ শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএফএম নাজমুস সালেহীন।
জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, সংরক্ষণ ও পরিবহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। ইলিশ রক্ষায় জেলেদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে; কিন্তু জেলেরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরছেন। কেউ কেউ ফ্রিজে ইলিশ সংরক্ষণ করছেন। যেসব জেলেদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই তারা রাতে হাট বসিয়ে ইলিশ বিক্রি করছেন।
ভেদুরিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান, প্রতিদিনই ভেদুরিয়া ও আবুপুর খেয়াঘাটে ইলিশের হাট বসে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে সেখানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী চায়ের দোকান ও হোটেল। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলেরা ইলিশ বেচা-কেনা করেন। মাঝে মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসন আসলে দালালদের মাধ্যমে আগেই সংবাদ পেয়ে দ্রুত গা-ঢাকা দেন জেলেরা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএফএম নাজমুস সালেহীন বলেন, প্রতিদিন আড়িয়াল খাঁ ও জয়ন্তী নদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৫ জেলেকে জেল এবং বেশ কিছু জেলেকে জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও জেলেরা আইন অমান্য করে নদীতে ইলিশ শিকারের চেষ্টা করছেন। জেলেদের থামাতে থানা ও নৌ-পুলিশের সহায়তায় নদীতে অভিযান বাড়ানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দীন জানান, জেলেদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ড ও অতিরিক্ত পুলিশের অভিযান চালানো হবে।
বরিশাল বিভাগ