পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের চিকনিকান্দী বাজার এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সুমন রাজা ও তার বাহিনী। সুমন রাজা ও তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। সুমন রাজা ও তার বাহিনীর নামে গলাচিপা থানা ও আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। আর তাদের অত্যাচারের স্বীকার অত্র এলাকার ফাতেমা সিদ্দিক (বাবলিন), আ. কাইয়ুম, জাকির প্যাদা সহ আরো অনেকে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ৯ টার দিকে ফাতেমা সিদ্দিক (বাললিন) এর দোকানে ঢুকে লোহার রড ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে সুমন রাজা ও তার বাহিনী। এ বিষয়ে ফাতেমা সিদ্দিক (বাবলিন) বলেন, সুমন রাজা আগে থেকেই আমার কাছে চাঁদা দাবী করে আসছিল। আমি চাঁদা না দিলে আমাকে ও আমার ভাইকে দোকান করতে দিবে না। আমরা চাঁদা না দিলে ২২ ফেব্রুয়ারি রাত অনুমান ৪টার দিকে সুমন তার দলবল নিয়ে আমার দোকানের তালা ভেংগে আমার দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমি বিকালে গলাচিপা থানায় এসে অভিযোগ করি।
এতে সুমন রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার ভাইকে দোকানে পেয়ে মারধর করে। আমাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী গলাচিপা থানা পুলিশে খবর দিলে সুমন ও তার বাহিনীর পালিয়ে যায়। পরে গলাচিপা থানা পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে আহত কাইয়ুম জানান, সুমন রাজা ও তার বাহিনীর সদস্যরা কোন কিছুই তোয়াক্কা করছে না। চিকনিকান্দী গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. সুমন রাজা (৩০), মো. জাফর হাওলাদারের ছেলে মো. অলি (৩২), হারুন মোল্লার ছেলে মো. রবিউল মোল্লা, মো. ইউসুফ মোল্লার ছেলে মো. নিজাম মোল্লা আরো ৮/১০ জন লোক দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম সহ চিকনিকান্দী বাজার ও গ্রামে প্রতিবেশী এবং এলাকার নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার করে চাঁদাবাজী, দোকান লুটপাট, মাদক ব্যবসা ও জমি দখল করে আসছে। তারা আমাকে ও আমার বড় বোনকে এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে আহত করে। এ বিষয়ে মিজানুর রহমান শাকিল জানান, সুমন এলাকায় গত ১০ বছর ধরে অসামাজিক অপকর্মসহ ইয়াবা ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এ বিষয়ে সুমন রাজার মুঠোফোনে জানতে কল করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে চিকনিকান্দী গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিবেক দেবনাথ বলেন, দু’পক্ষকে একাধিকবার ডাকা হলেও সুমন রাজা ইউনিয়ন পরিষদে আসে না।
চিকনিকান্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ বলেন, যদিও বিষয়টি আমি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি, দু’পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মীমাংসার ব্যবস্থা করব। তবে যদি কোন মামলা হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি আইন দেখবে। এ বিষয়ে গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, এ উপজেলায় মাদকের কোন ঠাই নাই। সে যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য সুমন রাজা ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মো. কাইয়ুম বাদী হয়ে মঙ্গলবার গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার সি,আর মামলা নং- ১৬৫/২৪। আদালত গলাচিপা থানার ওসিকে এজাহার নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
পটুয়াখালী